ঈদ মানে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা। মা-বাবাকে সালাম করে ঈদের দিন শুরু করা। ঈদের নামাজ শেষে ঈদগাহে স্বজন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে কোলাকুলি। এরপর পশু কোরবানিতে আনন্দ ভাগাভাগি।
কিন্তু দেশের সব পেশার মানুষের ভাগ্যে এ উচ্ছ্বাসে ভাসার সুযোগ হয় না। এ তালিকায় রয়েছেন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদকর্মী, চিকিৎসক, নিরাপত্তাকর্মীসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিতরা। তাদের কাছে ঈদ মানে অন্য সাতটা দিনের মতো দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যনিষ্ঠা। সে সঙ্গে প্রিয়জনদের মনে পড়া।
ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজাহান মন্ডল বলেন, ‘নিজের বাড়িতে ঈদ তো সবার জন্যই আনন্দের। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। তবে কর্মক্ষেত্রে ঈদও একটা আলাদা অনুভূতি এনে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ১৬ বছরের কর্মজীবনে দুই বা তিনটি ঈদ আমি দেশের বাড়ি দিনাজপুরে করতে পেরেছি। এ ছাড়া সব সময় কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনেই থাকি। এতেই আনন্দ পাই। এটা একটা অন্যরকম খুশি যে ঈদের দিনেও মানুষের পাশে থাকতে পারি।’
সংবাদকর্মী আল-আমিন বলেন, ‘ঈদ আনন্দ বা ঈদের অনুভূতি বলতে গেলে মূলত শৈশবের ঈদের কথাই বারবার সামনে চলে আসে। আমার মনে হয়, তখনকার ঈদ ছিল উদযাপনের। একটা বয়সে এখন এসে এটা রূপ নিয়েছে দায়িত্বে। ঢাকায় কাজের জন্য থাকতে হয়। ঈদে কর্মস্থলের পরিবেশও উৎসবমুখর। তাই খুব একটা খারাপ লাগে না।’
ইবনে সিনা হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক শিশির আফরোজ বলেন, ‘রোগীদের সেবা দিতে ঈদে থাকতে হয়। এ সময় চিকিৎসকদের বেশিরভাগই ছুটিতে থাকেন। তাই বাড়তি চাপ নিয়ে কাজ করতে হয়৷ তবে ভালো লাগে মানুষের পাশে থাকতে। এই অনুভূতি একেবারেই আলাদা। রোগীর মুখের হাসি অনেক সময় বাড়ির ঈদ আনন্দকেও ছাড়িয়ে যায়।’
কল্যাণপুরে একটি ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী মিলন বলেন, ‘মানুষ টাকা তুলতে আসে। বুথ এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা ঈদে দায়িত্ব পালন করি। ঈদের আগে বা পরে বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। তখন আরেকজন দায়িত্বে থাকেনি।’
বেসরকারি একটি উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘অফিসের জন্য বাড়ি যেতে পারিনি। বাসার সবাইকে মনে পড়ছে। অফিসে কলিগদের সঙ্গে ঈদ কাটছে।’