ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভায় ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় সুবিধাভোগীদের ওপর হামলা ও মারপিটের ঘটনায় পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আহত মো. মিঠুনের মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মেয়র ছাড়া মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, মেয়রের আপন ভাতিজা উপজেলার ছাতারভাগ গ্রামের বকুল হোসেন মন্ডলের ছেলে সাগর মন্ডল, ব্রক্ষ্মপুর পুর্বপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে রহিদুল ইসলাম এবং তার ছেলে নিশান প্রামানিক, নীলডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মো. রুবেল, হলুদঘর জাঙ্গালপাড়া গ্রামের মৃত হেফাজুর রহমানের ছেলে মো. মিলন।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরসহ ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলাটি করেছেন মর্জিনা বেগম। মামলাটি যথাযথভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২২ জুন সকাল থেকে নলডাঙ্গা পৌরসভার ভেতরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গরিব ও দুঃস্থদের মাঝে ভিজিএফের (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) চাল বিতরণ চলছিল। এ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে চাল গ্রহণ করছিলেন প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষ।
এ অবস্থায় দুপুর একটার দিকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাপাতিল মহল্লার বাসিন্দা শাহিন, জেলার, রকি, নয়ন, মিঠুন, রানা, মর্জিনা, নলডাঙ্গার রাজিব, আশিক, পুর্বসোনাপাতিল মহল্লার আলমঙ্গীর, মনিরুল, হলুদঘর মহল্লার স্বাধীন সহ অন্তত ২০ জন লাইনে দাঁড়ানো সুবিধাভোগীকে হাতুড়ি ও কাঠের বাটাম দিয়ে বেদম মারপিট করে পৌরসভা থেকে বের করে দেন মেয়র মনিরুজ্জামানসহ তার লোকজন। এ অবস্থায় লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের ওপরও চড়াও হন তারা। আহতদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নলডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ১ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম পিয়াস জানান, পৌরসভার নানাবিধ অনিয়মের প্রতিবাদ করাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের সাথে তার বিরোধ চলছে। ওই বিরোধের হামলা হয়।
নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট দাবি করে জানান, চাল বিতরণের সময় কয়েকজন উশৃংখল যুবক বিশৃংখলার সৃষ্টি করছিল। তাদের চলে যেতে বললে খারাপ আচরণ করে। এ সময় উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মারপিট বা ক্ষুরের আঘাতের ঘটনা সঠিক নয়।
তিনি বলেন, তারা চাল নিয়ে ঘরের মধ্যে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিল। অন্যদের সুবিধা করে দেয়ার জন্য তাদের চলে যেতে বলা হয়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। তার সাথে শরিফুল ইসলাম পিয়াসের কোনো নেই।
মামলা হওয়ার পর রাতে মোবাইলে মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।