গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ছড়াচ্ছে উত্তাপ। কারণ এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভেতরেই হচ্ছে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আওয়ামী লীগের নৌকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গতবার নৌকা নিয়ে বিজয়ী মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।
এর মধ্যে নির্বাচনী প্রচারকালে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের গাড়িবহরে গত কয়েকদিনে একাধিকবার হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তারপরও ভোটের প্রচারে বের হচ্ছেন জায়েদা খাতুনের নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
শনিবার টঙ্গীতে গণসংযোগে গিয়ে ফের হামলা ও গাড়িবহরে ভাংচুরের শিকার হয়েছেন জায়েদা খাতুন। এই হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় আহত হয়েছেন ২ জন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের নিজ এলাকা ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের গরুর হাট রোডে শনিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গাড়িতে ছিলেন।
হামলায় রক্তাক্ত জখম হন জায়েদা খাতুনের কর্মী। ছবি: নিউজবাংলা
জানা গেছে, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে টঙ্গীর ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিরাশপাড়া, নদীবন্দর, ভুঁইয়া পাড়াসহ আশপাশের এলাকায় গণসংযোগের পর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে যায় জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী গাড়িবহর। তারা বউবাজার এলাকায় পৌঁছলে গাড়িবহর লক্ষ্য করে হঠাৎ পেছন থেকে কয়েকজন ঢিল মারে। এরপর সেখান থেকে দ্রুত বউবাজার রেললাইন পার হয়ে গরুর হাট সড়কে ঢুকতেই গাড়িবহর আটকে দিয়ে নৌকার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে আজমত উল্লা খানের নেতাকর্মীরা।
স্লোগান দিতে দিতে হঠাৎই জায়েদা খাতুনের গাড়ির পেছনে থাকা একটি মাইক্রোবাসে ভাংচুর চালায় কয়েকজন যুবক। এ সময় তারা ২ জনকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়ির বাইরে বের করে নিয়ে মারধর করে।
কিছুক্ষণ পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সেখান থেকে গাড়িবহরটি পেছনের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে পুলিশি নিরাপত্তায় টঙ্গীর মধুমিতা রোড হয়ে স্টেশন রোড দিয়ে ছয়দানায় বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দেন জায়েদা খাতুন।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম প্রচার চালিয়ে গরুর হাট এলাকায় গেলে সেখানে নৌকার একটি মিছিল গাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশি পাহারায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়ি ঘুরিয়ে নিরাপদে তার বাসভবনে পৌঁছে দেয়া হয়।
‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
প্রচারে বাধা ও হামলার বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে তার মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন।
এদিকে আজমত উল্লা খান বরাবরই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় নিজের কর্মী-সমর্থকদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছেন।
এর আগে হামলার ঘটনা নিয়ে আজমত বলেছেন, ‘জাহাঙ্গীর নাটক করছে, মিথ্যাচার করছে। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী তাদের প্রচারে বাধা দিচ্ছে না।’