বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোলাগুলি আর হত্যাকাণ্ডে পাহাড়ে আতঙ্ক, নিরাপত্তা জোরদার

  • প্রতিনিধি, বান্দরবান   
  • ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ২৩:০০

সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ দুটির মধ্যে গোলাগুলি ও প্রাণহানির ওই ঘটনার পর দুর্গম পাহাড়ের ২০০ মানুষ রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং ৬০ জন রুমার বম কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গোটা জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি, বিভিন্ন চেকপোস্টে চলছে তল্লাশি।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় সশস্ত্র দুই সংগঠনের গোলাগুলিতে ৮ জন নিহত হওয়ার পর চরম আতঙ্কে মধ্যে রয়েছেন পাহাড়ি জনপদের মানুষ। দুর্গম পাহাড়ি জনপদের অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গোটা জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি, বিভিন্ন চেকপোস্টে চলছে তল্লাশি।

কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-সংস্কার) সশস্ত্র সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতে রোয়াংছড়ির খামতাং পাড়ায় দফায় দফায় গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়। এ সময় বম সম্প্রদায়ের ৭ জন ও খ্যায়াং সম্প্রদায়ের ১ জন নিহত হন।

সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ দুটির মধ্যে গোলাগুলি ও প্রাণহানির ওই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় লোকজন চরম আতঙ্কে দিন কাটাছে। পাহাড়িদের অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। নিজেদের পাড়া ছেড়ে রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ২০০ মানুষ। এছাড়া রুমার বম কমিউনিটি সেন্টারে শুক্রবার থেকে আশ্রয় নিয়ে আছে ৬০ জন।

খ্যায়াং সম্প্রদায়ের এসব মানুষকে নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে পুলিশ। তাদের জন্য সেনাবাহিনী ও প্রশাসন খাদ্য সরবরাহ করছে।

রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাং পাড়ার বাসিন্দা অলিপার খ্যায়াং জানান, ‘গোলাগুলির পর ভয়ে আমরা পাড়া থেকে রোয়াংছড়ি সদরে পালিয়ে এসেছি। পরিস্থিতি শান্ত হলে বাড়ি ফিরব।’

রোয়াংছড়ি জোনের আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার ফাহিম মাহমুদ বলেন, ‘কেএনএফ-এর সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় সেখান থেকে অনেকে চলে আসছে। আমরা তাদের থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করেছি।’

দুই সন্ত্রাসী সংগঠনের মুখোমুখি অবস্থানে বান্দরবানের রোয়াংছড়ির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হয়ে পড়েছে সুনসান। ছবি: নিউজবাংলা

কেএনএফের সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) ক্যাপ্টেন ফ্লেমিংয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার রাতে কেএনএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানায়, ‘বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানছি উপজেলায় চার চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে সে যে-ই হোক গুলি করা হবে। কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর রামথার পাড়ার কারবারিসহ আটজনকে সংস্কারপন্থীরা ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করায় এই কারফিউ জারি রাখা হলো।’

কেএনএফ-এর পক্ষ থেকে এমন হুমকির পর কোনো চালক ওই তিন উপজেলার পাহাড়ি সড়কে পারতপক্ষে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন না।

২০২২ সালের অক্টোবর থেকে যৌথ অভিযানের সময় কেএনএফ-এর দুই সদস্য এবং কেএনএফ-এর গুলিতে মগ পার্টির তিনজন নিহত হয়। এছাড়া চলতি বছরের ১২ মার্চ কেএনএফ-এর গুলিতে সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন নিহত হন। সবশেষ ৭ এপ্রিল ইউপিডিএফ- (সংস্কার)-এর গুলিতে কেএনএফ-এর ৮ জন নিহত হয়।

১১ মার্চ থানচি থেকে ১২ জন নির্মাণ শ্রমিক ও ১৫ মার্চ রুমার লংথাসি ঝিরি এলাকার সড়ক থেকে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আনোয়ারসহ ৩ জনকে অপহরণ করে কেএনএফ। অবশ্য পরে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। ওই সময় পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৬৮জন জঙ্গি ও কেএনএফ-এর বেশ কয়েকজনকে আটক করে র‌্যাব।

নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর

বৃহস্পতিবার রাতে রোয়াংছড়ির খামতাং পাড়ায় দু’দলের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে

ময়নাতদন্তের পর শনিবার দুপুরে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে পরিবারের পক্ষে বম সোশ্যাল কাউন্সিলের নেতারা মরদেহ গ্রহণ করেন। এ সময় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোলাগুলির ওই ঘটনার পর জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলোও পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর