সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল পটুয়াখালীর ছেলে ইমরানের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ান নারী নিকির বিয়ে অবশেষে পারিবারিকভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।
দীর্ঘ পাঁচ বছর অপেক্ষা শেষে এক ডলার দেনমোহরে বৃহস্পতিবার তাদের বিয়ের কার্যক্রম পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
আইনজীবী মো.আল-আমিন হাওলাদার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা শহিদুল ইসলাম তাদের বিয়ে পড়ান। এরপর বাংলাদেশের নিয়ম অনুসারে তাদের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
ইমরান হোসেন পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এবং তার স্ত্রী নিকি উল ফিয়া ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া প্রদেশের জেম্বার এলাকার বাসিন্দা ইউলিয়ানতোর এবং শ্রীআনির সন্তান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ফেসবুকে ইন্দোনেশিয়ার মেয়ে নিকির সঙ্গে ইমরানের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর বন্ধুত্ব, একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের কোনো আপত্তি না থাকায় ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন নিকি। তখন ইমরানের বয়স ২১ বছর না হওয়ায় তারা বিয়ে করতে পারেনি, এতে দেশে ফিরে যান নিকি।
বর্তমানে ইমরান উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
ইমরান জানান, গত সোমবার রাতে ইন্দোনেশিয়া থেকে বিমানে নিকি বাংলাদেশে আসে। মঙ্গলবার লঞ্চে ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বুধবার সকালে পটুয়াখালী আসেন। ওইদিনই পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করে নিকিকে বিয়ের জন্য বাড়িতে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘আমার এবং নিকির ইচ্ছায় এক ডলার মান হিসাব করে ১০১ টাকা দেনমোহরে আমরা বিয়ে করি।’
ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় নিকি উল ফিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আজকের দিনের জন্য আমি খুব খুশি এবং আমি সারা জীবন বাংলাদেশে থেকে যাব।’
ইমরানের মামা কবির হোসেন জানান, অনেক বছর আগ থেকে ইমরানের সঙ্গে বিদেশী মেয়ে নিকির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। এরপর থেকেই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। তাদের দুজনের ইচ্ছা অনুযায়ীই এই দেনমোহর ধার্য করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আমলি আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান তাদের আইনিভাবে বিয়ে সম্পন্ন করান। এর আগে তাদের
আইনি সহায়তা প্রদান করি ও তাদের বিয়ের এফিডেভিট সম্পন্ন করে দেই।’
ইমরানের বাবা দেলোয়ার হোসেন জানান, নিকির মায়ের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের সম্মতি নিয়েই এ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ওরা দুজনে সুখে থাকুক, ভালো থাকুক এটাই চাই।’