কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের ঘটনায় দোষ স্বীকার করে অভিযোগকারী ছাত্রী ফুলপরীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এই সহ-সভাপতি বুধবার তদন্ত কমিটির সামনে অভিযোগকারীর কাছে ক্ষমা চান।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির ডাকে বুধবার ফের ক্যাম্পাসে এসেছেন ভুক্তভোগী। দিনব্যাপী তিনটি তদন্ত কমিটির সদস্যরা পৃথকভাবে ক্যাম্পাসে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
ঘটনার পর থেকে এ নিয়ে গত পাঁচ দিনে তিনবার ক্যাম্পাসে এসেছেন ভুক্তভোগী। ক্যাম্পাসে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর জয়শ্রী সেন একটি গাড়িতে করে প্রধান ফটক থেকে তাকে হলে নিয়ে আসেন।
জয়শ্রী সেন বলেন, ‘আমি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মূল ফটক থেকে ওকে রিসিভ করি। তারপর বিভিন্ন তদন্ত কমিটির কাছে নিয়ে যাই।’
এদিকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলের বিভিন্ন আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। এ ঘটনায় তিন কমিটি ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত উভয়ের সঙ্গেই কথা বলেছে।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল নিজ কার্যালয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাকে মুখোমুখি করেন। অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা ও ড. মুর্শিদ আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সেখান থেকে বের হয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত নেত্রী।’
অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরাও ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে স্বীকার করেন। হাত-পা ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যা হওয়ার তদন্ত কমিটি করবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত কাজ গুছিয়ে এনেছি। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দিতে পারব।
প্রসঙ্গত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাবাসসুম এবং আরও ৭-৮ জন জড়িত বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।