তুরস্কের আদিয়ামান শহরের জুম হেরিয়াত মাহেল্লিসি এলাকায় ধ্বংসস্তূপ থেকে এক পরিবারের ৪ জনসহ আরও ৭ মরদেহ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দল। এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ২২ মরদেহ ও এক কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার করেছেন বাংলাদেশের উদ্ধারকারীরা।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. শাহজাহান সিকদার বুধবার জানান, তুরস্ক থেকে সবশেষ উদ্ধার পরিস্থিতি জানিয়েছেন উদ্ধারকারী দলের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী ও ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফয়সালুর রহমান। উদ্ধার অভিযানে শুরু থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার দেশটির ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মাহেল্লিসি এলাকায় পঞ্চম দিনের মতো অভিযান চালান বাংলাদেশের উদ্ধারকারীরা। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ওই অভিযানে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন মা-বাবা ও তাদের দুই সন্তান।
বুধবার পরিচালিত ষষ্ঠ দিনের অভিযানে তারা আরও ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এর কেন্দ্রস্থল ছিল সমতলের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে। সবশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, ওই ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে উদ্ধার সহায়তা ও চিকিৎসা দিতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ৪৬ সদস্যের একটি দল বুধবার রাত ১০টায় বিমান বাহিনীর সি-১৩০ বিমানে তুরস্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে।
পরদিন বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে দলটি তুরস্কের আদানা মিলিটারি বেইসে পৌঁছে। সেখান থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরের গন্তব্য আদিয়ামানের উদ্দেশে বাসে রওনা হন দলের সদস্যরা। আদিয়ামান শহরে পৌঁছে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ শুরু করে।
ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাডভাইজার গ্রুপ-এর নীতিমালার আলোকে ২৪ জন সেনাসদস্য এবং ১২ জন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যের সমন্বয়ে ৩৬ সদস্যের আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে গেছে।
এছাড়াও ওই দলে রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০ সদস্যবিশিষ্ট সেনাবাহিনীর দুটি মেডিক্যাল টিম। তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদিসহ জরুরি চিকিৎসা সেবা দেবে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে উদ্ধারকারী দলের সদস্য হিসেবে যারা যাচ্ছেন তারা ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাডভাইজারি গ্রুপ-এর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।