দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভার এক নম্বর প্যানেল মেয়র আব্দুল কাদের মিয়ার বিরুদ্ধে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আয়েশা সিদ্দিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নারী কাউন্সিলর ঘোড়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। আর মামলার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত প্যানেল মেয়র আব্দুল কাদের মিয়া।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি এ ব্যাপারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী নারী কাউন্সিলর আয়েশা সিদ্দিকা।
অভিযুক্ত আব্দুল কাদের মিয়ার প্যানেল মেয়রের পাশাপাশি পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ভুক্তভোগী আয়েশা সিদ্দিকী সংরক্ষিত-৩ নম্বর ওয়ার্ডের (৭, ৮ ও ৯) নারী কাউন্সিলর।
মামলার এজাহার সূত্রে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, ‘আমি ঘোড়াঘাট পৌরসভার দুই বারের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর (৭, ৮, ৯) হিসাবে ন্যায়নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে আসছি। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারী প্রতিনিধিদের অনেক সময় নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়। যৌন হয়রানি এমনকি ধর্ষণের শিকার পর্যন্ত হতে হয়। তারপরও নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মুখ বুজে মেনে নিয়ে জনসেবার জন্য কাজ করতে হয়।
‘দীর্ঘদিন যাবত আমাদের পৌর পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (১ নম্বর প্যানেল মেয়র) আমাকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে পৌরসভায় একা পেলে তার লালসা পূরণের জন্য আমাকে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে আসত এবং সুযোগ বুঝে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিত। আমি মুখ বুঝে সহ্য করতাম। সম্মানের ভয়ে কারো কাছে কিছু বলতেও পারতাম না।’
আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘গত ২১ জানুয়ারি প্যানেল মেয়র আবদুল কাদের মিয়া তার মোবাইল থেকে আমাকে কল দিয়ে তার বাড়িতে আসতে বলেন। তার এসব কল রেকর্ড করে রাখা আছে। একইদিন বিকেল ৩টার দিকে পৌরসভার কক্ষে একা বসে থাকাকালীন সময় হঠাৎ করে আবদুল কাদের মিয়া কক্ষে ঢুকে আমাকে জাপটে ধরেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক পৌর মেয়র আব্দুস ছাত্তার মিলনকে মৌখিকভাবে অবগত করা হয়। একই সঙ্গে গত ২৩ জানুয়ারি লিখিতভাবে মেয়রের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়।’
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত প্যানেল মেয়র আব্দুল কাদের মিয়ার মোবাইল কল করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘোড়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম জানান, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। আসামি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।