বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৬.১ ডিগ্রিতে কাঁপছে তেঁতুলিয়া

  •    
  • ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:২৬

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির ১৪ তারিখ পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে, তা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। জানুয়ারির শেষে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে।’

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শনিবার সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড করা হয়েছে, যা সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম।

চলতি মৌসুমে জেলারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি, যার প্রভাবে জমে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরে এ জেলায় তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানায়, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কমে আসায় শীত আরও বাড়বে।

আগামী সোমবার থেকে হালকা বৃষ্টিপাতসহ আকাশ মেঘলা থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। সে ক্ষেত্রে তাপমাত্রা আরও কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

পঞ্চগড়ে বইছে কনকনে উত্তরের শীতল বাতাস। সকাল পর্যন্ত ভারি কুয়াশা ঝরতে থাকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির ফোঁটার মতো। সেই সঙ্গে আছে উত্তরের কনকনে শীতল বাতাস। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন জেলার খেটে খাওয়া লোকজন।

এ শীতে সাধ্যমতো গরম কাপড় গায়ে জড়িয়েই তারা বেরিয়েছেন কাজে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

জানুয়ারির প্রথম থেকেই পঞ্চগড় জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস মানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তাদের হিসাবে টানা কয়েক দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে মাঝারি এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

ঘন কুয়াশা এবং পাহাড় থেকে নেমে আসা হিমেল হাওয়া বইতে থাকায় সীমান্তের এ জনপদের মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে গেছে।

একদিকে কর্মহীন হয়ে পড়া, অন্যদিকে শীতজনিত বিভিন্ন রোগবালাই মানুষকে অসহায় করে ফেলেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের দুর্ভোগ চরমে।

সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কের সংখ্যা বাড়ছে।

পঞ্চগড় শহরের হোটেলশ্রমিক শরিফুল ইসলাম জানান, শীতে কাজে যেতে কষ্ট হচ্ছে, কাজকর্ম একেবারেই কমে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।

রামেরডাঙ্গা এলাকার দিনমজুর আকবর আলী বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে ঠান্ডার কারণে তেমন কোনো কাজ মিলছে না।’

হরেক মালের ব্যবসায়ী সুলতান জানান, শীতের মধ্যেই সাইকেলে করে মালামাল নিয়ে গ্রামে যেতে হচ্ছে, তবে তীব্র শীত এবং ঘন কুয়াশার কারণে টিকে থাকাই মুশকিল; বেচাকেনাও নেই।

পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুদের ডায়রিয়া এবং শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

‘তাদের চিকিৎসা এবং সুরক্ষিত রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, তবে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশকে মেঝেতে ভর্তি করতে হচ্ছে।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির ১৪ তারিখ পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে, তা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। জানুয়ারির শেষে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে।’

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর শীতপ্রবণ এই এলাকার মানুষকে সরকারিভাবে সুরক্ষা দেয়া হয়। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে প্রায় ৫০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে বরাদ্দ চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

শীতার্ত মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে বিত্তশালীদের আহ্বান জানান ডিসি।

তেঁতুলিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী আনিস জানান, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে এই উপজেলায়। পাহাড়ি হিমেল হাওয়া বইতে থাকায় কর্মজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। শীতের সুরক্ষার পাশাপাশি অভাবি মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এ বিভাগের আরো খবর