শীতের শুরু থেকে গ্যাসের সংকটে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায় জ্বলছে না রান্নার চুলা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকে।
নগরীর কালিয়াজুড়ি, কাপ্তান বাজার, সাহাপাড়া, সংরাইশ, হাউজিং এস্টেট, শহরতলীর বিবির বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজনে গ্যাস মিলছে না।
কালিয়াজুড়ি এলাকার আজমেরী বেগম জানান, সকালে পাউরুটি খেয়ে অফিসে যান। গত কয়েক দিন ধরে সকালে তিনি এ ভাবেই নাস্তা করেন।
কারণ সকালে গ্যাসের চাপ কম থাকে, চুলা জ্বলে না ৷ স্বামী আবদুল হকও অফিসে যান না খেয়েই। তবে তারা সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ৷
হাউজিং স্টেট এলাকার বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, এক সপ্তাহ ধরে গ্যাস সরবরাহ সচল নেই। তাই অফিস শেষ করে খাওয়ার জন্য হোটেলের উপর নির্ভর করতে হয়।
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মোসলেহ উদ্দিন সেলিম জানান, ভোর রাতে গ্যাস যায়, আসে রাত ১০টায়, তাই ফজরের আগে রান্না করতে হয়। সারা দিনের রান্না একসঙ্গে করতে হয়। দিনে খাবার গরম করে খাওয়ার সুযোগ নেই।
সাহা পাড়া এলাকার হারুনুর রশিদ জানান, গ্যাস ভোরে যায়, রাত ১১টায় আসে। রান্না করে খেয়ে ঘুমাতে অনেক রাত হয়ে যায়। এই দুর্ভোগ থেকে কবে মুক্তি পাবেন জানেন না।
বিবির বাজার এলাকার অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ জানান, শীতকালে এই এলাকা গ্যাস শূন্য হয়ে যায়, বিল দেন কিন্তু গ্যাস পান না।
কুমিল্লা বিসিক শিল্প নগরীর বিসমিল্লাহ মুড়ি মিলের পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা দিনের বেলায় তেমন গ্যাস পাচ্ছি না। এতে আমাদের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছে।’
কুমিল্লা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের একটি সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গ্রিড থেকে কুমিল্লা নগরীর নন্দনপুর বিশ্বরোড হয়ে কুমিল্লা নগরীতে গ্যাস সাপ্লাই দেয়া হয়। চারটি ভাগে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। একটি ইপিজেডে, আরেকটি বাখরাবাদ গ্যাস অফিস ক্যাম্পাসে, তৃতীয়টি চর্থার মুরগির খামার এলাকায় ও চতুর্থটি জেলখানা রোড এলাকায় প্রবেশ করেছে।
উক্ত এলাকায় রয়েছে ডিস্ট্রিক রেগুলেটরি স্টেশন। স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকায় গ্যাস পাওয়া গেলেও দূরের এলাকায় দুর্ভোগ।
সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে নগরী ও আশপাশ এলাকায় চাহিদা ৫৫-৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুটের কম গ্যাস।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের জিএম (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) মর্তুজা রহমান খান বলেন, ‘শীতে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যায়। এ দিকে আমরা প্রয়োজনের তুলনায় গ্যাস পাচ্ছি না, তাই সংকট দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি।’