সংবাদ প্রকাশের জেরেই সময় টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরোর প্রধান ও সিনিয়র রিপোর্টার অপূর্ব অপুর ওপর হামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় হওয়া মামলায় সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে জমা দেয়া অভিযোগপত্রে তিনি বিষয়টি উল্লেখ করেন।
গত বছরের ২০ নভেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) পরিদর্শক ছানোয়ার হোসেন। বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহস্পতিবার।
ছানোয়ার জানান, সংবাদ প্রকাশের জেরে পরিকল্পিতভাবে অপূর্বকে হেনস্তা করতেই হামলা চালানো হয়, তবে তাকে অপহরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, সাত মাস তদন্ত করে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
কী আছে তদন্ত প্রতিবেদনে
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আসামি নুরে আলম হাওলাদার মামলার অন্য আসামি হাবিবুর রহমান ওরফে ট্যারা হবিবকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিক অপূর্বর সময় টেলিভিশনের অফিসে যাওয়ার বিষয়টি দেখিয়ে দেন। সে সময় মামলার অপর আসামি হাবিবুর রহমান রিকশায় করে নগরীর শীতলাখোলা এলাকায় অপূর্বর পথরোধ করে হামলা চালিয়ে তাকে হেনস্তা করেন। একপর্যায়ে অপু দৌড়ে গফুর সড়কের দিকে যেতে থাকলে প্রাইভেট কারের পাশে থাকা মামলার প্রধান আসামি জিহাদুল ইসলাম জিহাদ তার হাত ধরে। তখন অপু নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ফের দৌড়ে চলে যান।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় জানা যায়, আসামিরা বেআইনিভাবে পরস্পর যোগসাজশে শাহিন হোসেন মল্লিক মামুনের পরিকল্পনা এবং নুরে আলম হাওলাদারের ইশারায় পরিকল্পিতভাবে অপুকে হুমকি দেয়ার পাশাপাশি মারধর করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পরিদর্শক ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালের ২৯ মে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সময় টিভির বরিশাল অফিসে যাওয়ার পথে ব্যুরোর প্রধান অপূর্ব অপুর ওপর হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনার পর সাংবাদিক অপু বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে প্রথমে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক সাইদুর রহমান। এরপর দায়িত্ব পান গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক হরিদাস নাগ। সবশেষে দায়িত্ব দেয়া হয় আমাকে। এ কারণে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দিতে কিছুটা দেরি হয়েছে।
‘আমি পুরো ঘটনাটি বারবার তদন্ত করেছি। প্রতিবারই উঠে এসেছে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এই ঘটনা ঘটানোর কথা, তবে অপূর্ব অপুকে অপহরণচেষ্টার কোনো প্রমাণ পাইনি। চার্জশিট বা অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছি। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বিচার করবে।’