চলমান আন্দোলনে ভীত হয়ে সরকার বিরোধী দল দমনে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গণঅবস্থান কর্মসূচিতে ফরিদপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কিছুদিন আগেও বলতেন যে আমরা রাস্তায় দাঁড়াতে পারি না। আমাদের নাকি মেরুদণ্ড নেই। এখন আপনারা এতো অস্থির হয়ে গেছেন যে আন্দোলন বন্ধ করতে সব শক্তি নিয়োগ করে জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করছেন।
‘তার অর্থই, সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। সরকার প্রমাদ গুনছে, ভয় পেয়েছে। অত্যন্ত বেশি ভীত হয়েই তারা এসব আক্রমণ চালাচ্ছে।’
চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্র্র্রধানমন্ত্রীর অনেক কথারই আমরা জবাব দেই না। উনি কখন কী বলেন জনগণ ঠিক বুঝতে পারে না। আমরা মনে করি, এগুলোর জবাব দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
‘একাত্তরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেদিন পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমপর্ণ করে তার আগের দিনই ইয়াহিয় খান বলেছিলেন, জং জারি রায়ে গা। পতন যখন স্পষ্ট হয়, পতন যখন আঘাত করতে থাকে, পতন যখন দেখতে পায়, তখন এ ধরনের অনেক অসংলগ্ন কথা বেরিয়ে আসে।’
‘গণঅবস্থান কর্মসূচি: একদিনে গ্রেপ্তার শতাধিক’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘বুধবার গণঅবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ফরিদপুর ও ময়মনসিংহে ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
‘পুলিশ সেখানে শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকাই পালন করেনি, বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে, লাঠিচার্জ করেছে, গ্রেপ্তার করেছে।
‘গণঅবস্থানে একদিনে সারাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছে শতাধিক নেতাকর্মী। ক্ষমতাসীনদের হামলায় আহত হয়েছে প্রায় আড়াই শ’। ফরিদপুরে পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’
যুগপত আন্দোলনে গঠিত বিভিন্ন জোট নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কথার উত্তর দেই না। আমার মতোই সারাদেশে মানুষ ওনার কথাকে গুরুত্ব দেয় না।’
১৬ জানুয়ারির কর্মসূচি সংশোধন
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১০ দফা দাবি আদায় ও বিদ্যুতের মূল্য কমানোর দাবিতে ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী সব মহানগর ও উপজেলায় সমাবেশ এবং মিছিল হবে। জেলা সদরে বলেছিলাম, জেলাটা হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।