সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পত্তি থাকার বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে বৃহস্পতিবার এ আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দি দাস। পরে আবেদনটি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করলে আদালত রোববার দিন ঠিক করে দেয়।
আবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশন, বিএফআইইউ, এনবিআর ও সিআইডিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
আবেদনকারী আইনজীবী বলেন, ‘এ বিষয়ে ২০২১ সালে একটি রিট করা আছে। সেই রিটের সঙ্গে আজ একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে।’
বুধবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির হাজার প্রপার্টি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে বৃহস্পতিবার আবেদনটি করা হয়েছে।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ্যে-গোপনে বিপুল পরিমাণ মূলধন স্থানান্তর হচ্ছে দুবাইয়ে। এ অর্থ পুনর্বিনিয়োগে ফুলে-ফেঁপে উঠছে দুবাইয়ের আর্থিক, ভূসম্পত্তি, আবাসনসহ (রিয়েল এস্টেট) বিভিন্ন খাত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সিএডিএস) সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের মালিকানায় সেখানে ৯৭২টি প্রপার্টি ক্রয়ের তথ্য পাওয়া গেছে, কাগজে-কলমে যার মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার, তবে প্রকৃতপক্ষে এসব সম্পত্তি কিনতে ক্রেতাদের ব্যয়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত দুই বছরে দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের প্রপার্টি ক্রয়ের প্রবণতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কিনেছেন বাংলাদেশিরা, যার তথ্য তারা দেশে পুরোপুরি গোপন করেছেন।
বিভিন্ন মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের গোপনে কেনা সম্পদের অর্থমূল্য এখন কম করে হলেও এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। বৈশ্বিক অর্থনীতির করোনাকালীন বিপত্তির মধ্যেও দেশটির রিয়েল এস্টেট খাতের বিদেশি প্রপার্টি ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশিরা ছিল শীর্ষে।
স্থানীয় ভূমি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় দুবাইয়ে বাংলাদেশি ধনীরাই সবচেয়ে বেশি সম্পদ কিনেছেন। এদিক থেকে নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, চীন ও জার্মানির মতো দেশগুলোর বাসিন্দাদের পেছনে ফেলেছেন বাংলাদেশিরা।
দেশের বিত্তবানদের কাছে দীর্ঘদিন দুবাইয়ের আকর্ষণ ছিল নিছক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ আকর্ষণ রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য ও গোপন লগ্নির কেন্দ্র হিসেবে। আকর্ষণীয় মুনাফার খোঁজে রিয়েল এস্টেট ছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায় নাম লেখাচ্ছেন তারা। দেশের অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানই এখন দুবাইকে বেছে নিয়েছে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে।