বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোটালীপাড়ায় ২২ ফুট খালে ৭৪ ফুট ব্রিজ নির্মাণ, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

  • কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি   
  • ২০ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৩০

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ২২ ফুট প্রস্থের ছোট এক খালে নির্মিত হচ্ছে ৭৪ ফুট গার্ডার ব্রিজ। এদিকে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট দরখাস্ত দিয়েছে এলাকাবাসী।

অভিযোকারীরা জানান, পবনার পাড় গ্রামে গ্রামীণ সড়কে ব্রিজ নির্মাণের জন্য পাইল তৈরিতে রিং কম দেওয়াসহ নানা অনিয়ম হয়েছে ও পাইলের অর্ধেক মাটিতে পুঁতে বাকি অর্ধেকে পাইলের রড কেটে বিক্রি করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প (২য় সংশোধিত) এর আওতায় উপজেলার মান্দ্রা খেয়াঘাট থেকে বাপার্ড জাঠিয়া সড়কের ৬ হাজার ৫০ মিটার চেইনেজে ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২২ ফুট প্রস্থের পবনাড় পাড় খালে ৭৪ ফুট (২২ মিটার) আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ পায় মেসার্স সৌরভ ট্রেডার্স।

নির্মীয়মাণ ব্রিজের শুরুতেই ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এলাকাবাসী বারবার উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরে অভিযোগ জানানোর পরও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় অভিযোগ দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট।

স্থানীয়রা জানান, ব্রিজ নির্মাণে কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না। ঠিকাদারের লোকজন নির্মীয়মাণ পাইলিং থেকে রড খুলে বিক্রি করে দিচ্ছে। পাইল তৈরিতে নেওয়া হয়েছে দুর্নীতির আশ্রয়। পাইলে নিম্নমানের পাথর, অর্ধেক পরিমাণ রিং ও পরিমাণের চেয়ে কম সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পাইল। যে কারণে মাটির নিচে অর্ধেক পাইল ঢুকতেই পাইলের বাকি অংশ ভেঙে পড়ছে। পরবর্তীতে ঠিকাদারের লোকজন বাকি অর্ধেক পাইলের রড কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে।

দুর্নীতির নির্মাণাধীন ব্রিজসংলগ্ন বাসিন্দা মফিজুল বলেন, মানুষের হাঁটা-চলাচলের জন্য জাঠিয়া থেকে রাধাগঞ্জ গ্রামীণ এলাকায় শৈলদা নদীর পাড়ে মাটির রাস্তা হচ্ছে। সেই রাস্তাটিতে ৬টি সরু খালে ব্রিজ নির্মাণ করছে এলজিইডি। পবনার পাড়ের ২২ ফুট খালটিতে এলজিইডি ২২ মিটার (৭৪ ফুট) ব্রিজ নির্মাণ করছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে। ছোট এই খালে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার এক একটি কালভার্ট দিলেই হতো সেখানে ৩ কোটি টাকার বিশাল গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রাস্তা দিয়ে কখনও বাস গাড়ি চলাচলের সুযোগ নেই। তাহলে এত বড়ো ব্রিজ কাদের স্বার্থে? অন্যদিকে এই ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। এলজিইডি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কাজে ব্যাপক অনিয়ম করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ব্রিজটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. মুরসালিন সৌরভের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান।

এদিকে কাজের ধীরগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে পবনার গ্রামের মামুন শেখ বলেন, গত বছরের ১৬ অক্টোবর এই ব্রিজের কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখে। অথচ নির্মাণ কাজের ১০ ভাগ এখনও সম্পন্ন হয়নি।

কাজের অনিয়মেয়র বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম বলেন, ব্রিজের পাইল থেকে রড কেটে নেওয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে। ব্রিজের নির্মাণ মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক বলেন, ব্রিজের অনিয়মের অভিযোগটি উপজেলা প্রকৌশলীকে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

এলজিইডি গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর