রাজধানীর নয়াপল্টনে গণ-অবস্থান শুরু করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বুধবার বেলা ১১টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
এ কর্মসূচির সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও প্রধান অতিথি হিসেবে আছেন ৩৩ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পাওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া উপস্থিত আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মঞ্জু, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
গণ-অবস্থান অংশ নিতে জড়ো হয়েছেন হাজারো নেতা-কর্মী। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনের সড়কের একটি অংশে বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে সেখানে চেয়ার বসানো হয়েছে। গণ-অবস্থানে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের বসার জন্য সড়কে কার্পেট বিছানো হয়েছে। ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছে গণতন্ত্র মঞ্চ। একই সময়ে ১১টি দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন এই জোটের নাম ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ পুরানা পল্টন প্রিতম টাওয়ারের সম্মুখে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।
অন্য ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জোটের নেতারা।
এদিকে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়েছে গণফোরাম (একাংশ)। মতিঝিল নটরডেম কলেজের উল্টো দিকের রাস্তায় গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছে দলটি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। রাজধানীর বিজয়নগরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সমমনা গণতান্ত্রিক জোট।
বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় সর্তক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নয়াপল্টন ও কাকরাইল মোড়ে রাখা হয়েছে পুলিশের প্রিজনভ্যান ও জলকামান। এছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন মোড়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগও রাজধানী বিভিন্ন এলাকা অবস্থান নিয়ে শোডাউন ও মিছিল করারও ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূর্বঘোষিত গণ-অবস্থান কর্মসূচির অনুমতির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।
দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছেন।
বর্তমান সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ১০ দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচি থেকে দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিতে পারে দলটি।
এদিকে গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকার বাইরেও ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে গিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে সিলেটে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে আহমেদ আজম খান।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে বুধবার মাঠে থাকবে সাত দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। এ ছাড়া অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামও মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি থাকবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, ইয়ুথ ফোরাম, জিয়া নাগরিক সংসদ, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, জাতীয়তাবাদী চালক দলসহ ১৫টি সংগঠন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার এড়াতে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে না জামায়াতে ইসলামী। কৌশলগত কারণে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন না করলেও ওয়ান-ইলেভেনের দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করবে দলটি।