প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বর্তমান সরকারকে ফ্যাসিবাদি অভিযোগ করে তিনি এও বলেছেন, ফ্যাসিবাদ সরকার কখনও নিরস্ত্র জনগণের সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকতে পারবে না।
মঙ্গলবার বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এ কথা বলেন গয়েশ্বর। ফখরুল কারাগারে যাওয়ার ২৩ দিন পর মুক্তির দাবিতে ঢাকাস্থ্য ঠাকুরগাঁও জাতীয়তাবাদী ফোরাম এই কর্মসূচি পালন করে।
এদিনই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জন্য জামিন দেয়।
গয়েশ্বর বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও নেতাকর্মীদের মুক্ত করা হবে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ গণতন্ত্র চায়, জনগণ তাদের ভোট নিরাপদে দিতে চায়। আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে পারলে বাংলাদেশ মুক্ত হবে। মানুষ ভোট দিতে পারবে।’
শেখ হাসিনাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বাধা উল্লেখ করে করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তিনি যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবেন, ততক্ষণে পুলিশ, র্যাব, আদালত, প্রশাসন বাধা থাকবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে, পুলিশ জনগণের পক্ষে কাজ করবে, পুলিশ আর কখনও জনগণের উপর অত্যাচার করবে না। জনগণের খাদেম হিসেবে কাজ করবে।
‘এ কারণে আমরা বলছি, আগামী সুষ্ঠ নির্বাচনের একমাত্র পথ হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সরকার পদত্যাগ করলেই খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ সকল কারাবন্দির মুক্তি মিলবে।’
আদালত, সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সব কিছু শেখ হাসিনার কথায় চলে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘সকালে শেখ হাসিনা যা বলেন দুপুরে আদালত তাই করে। ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদরা টেলিভিশনে যা বলেন, আদালতে সেই মোতাবেকই রায় হয়। এসব দেখেই বুঝা যায় আদালত স্বাধীন নয়, স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়ও না।’
এ কারণে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম করতে হবে। ফ্যাসিবাদ সরকার কখনও নিরস্ত্র জনগণের সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকতে পারবে না, আগেও পারেনি। শেখ হাসিনার পতন অনিবার্য।’
মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে অমানবিকভাবে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নেই বলেই খালেদা জিয়াসহ নেতারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
‘আমরা আদালতকে একটি কথাই বলতে চাই, আমরা ন্যায়বিচার চাই। যাদেরকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে। তাদের নিয়ে আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই, আমরা করুণা চাই না। এতদিন আমরা ন্যায়বিচার পাই নাই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সোহেল রানার সভাপতিত্ব এবং যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল আনোয়ার আহমেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সহ প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম আলীম, সহতথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খাল শিমুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন, ওমর ফারুক শাফিন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যক্তিগত সহকারী ইউনুস আলীও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।