বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারি গুদামে ধান-চাল দিচ্ছেন না মিল মালিকরা

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ২২:৩৫

এক মিল মালিক বলেন- বর্তমানে ধানের দাম সাড়ে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ। অথচ সরকারি ক্রয়মূল্য প্রতি মণ ধানে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা কম। প্রতি কেজি চাল তৈরিতে খরচ পড়ে ৪৫ টাকা। অথচ সরকারি দরে প্রতি কেজি চাল ৪২ টাকা।

সরকারের বেধে দেয়া দামে ধান-চাল সরবরাহ করছেন না সিরাজগঞ্জের মিল মালিক ও কৃষকরা। সরকারি দামের কারণে লোকসান হচ্ছে দাবি করে গুদামে আমন ধান ও চাল সরবরাহে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা। যে কারণে সরকারের আমন সংগ্রহ অভিযানের সাফল্য নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারের এ ধান-চাল সংগ্রহ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে মার্চ পর্যন্ত চলবে।

এ বছর আমন ধানের সরকারি ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয় প্রতি কেজি ২৮ টাকা এবং চালের মূল্য প্রতি কেজি ৪২ টাকা।

এদিকে গত ২৬ নভেম্বর সরকারের সঙ্গে মিল মালিকদের চুক্তিবদ্ধ হওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত জেলায় মাত্র একজন মিল মালিক চুক্তিবদ্ধ হন। এ কারণে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময় ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বর্ধিত সময়ে ২২০টি মিলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস।

তবে জেলায় চালের মিলের সংখ্যা ৪৪০টি। অন্য মিল মালিকদেরও চুক্তিতে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ২৮ ডিসেম্বর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের চূড়ান্ত চুক্তিপত্রের কার্যক্রম থাকলেও দেখা যায়নি কোনো মিল মালিককে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মিল মালিক বলেন, ‘বর্তমানে ধানের দাম সাড়ে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ। অথচ সরকারি ক্রয়মূল্য প্রতি মণ ধানে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা কম। প্রতি কেজি চাল তৈরিতে খরচ পড়ে ৪৫ টাকা। অথচ প্রতি কেজি চালের সরকারি দর ৪২ টাকা।।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত রোপা মৌসুমে সরকারি গুদামে চাল দিয়ে এক লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এবার আবার চাল দিয়ে লোকসান করতে চাই না। তাই জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের বারবার পাঠানো নোটিশেও আমরা সারা দিতে পারছি না।’

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘলকান্দি গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছি। ধানের ভালো ফলনের পাশাপাশি দামও মিলেছে। কাঁচা ধানই স্থানীয় বাজারে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি।’

জেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বর্তমান বাজারে ধানের দাম বেশি। বাজারে পর্যাপ্ত ধানও নেই। চড়া দামে ধান কিনে গুদামে চাল সরবরাহ করা সম্ভব না। এছাড়া এ বছর মোট বিলের ওপর ২ শতাংশ উৎস কর ধরা হয়েছে। এ জন্য মিলাররা চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় চালের মিলের সংখ্যা ৪৪০টি। এর মধ্যে ২২০টি মিলের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গুদামে ধান ও চাল সরবরাহ না করা হলে তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’ অবৈধভাবে চাল ও ধান মজুতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ খাদ্য গুদাম পরিদর্শনের এসে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। দেশে পর্যাপ্ত ধান-চাল মজুত রয়েছে। খাদ্য ঘাটতি ও দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

নিবন্ধনকৃত সব মিল মালিক সরকারি দরে গুদামে ধান চাল সরবরাহ করবে। কোনো মিল মালিক তা না করলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে। আর কেউ অবৈধ মজুত করতে পারবে না, করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এছাড়া মন্ত্রী ধান, চাল ও গম ক্রয় এবং সংগ্রহের বিষয়ে পরামর্শমূলক দিকনির্দেশনা দেন।

পরিদর্শনকালে কয়েকটি গুদামে ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে কিনা তা দেখেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান, চাল সংগ্রহের নির্দেশনা দেন।

এরআগে, গত নভেম্বরে সচিবালয়ে এক সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর মোট ৫ লাখ টন চাল ও ২ লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি চাল ৪২ টাকা ও ধান ২৮ টাকায় কেনা হবে। আমন কাটা শুরু হলে ধান কেনা শুরু হবে। ১০ নভেম্বর থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে।’

উল্লেখ্য, এ বছর সিরাজগঞ্জ জেলায় তিন হাজার ৯৭৭ টন ধান এবং ৯ হাজার ৫৪০ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

১০ নভেম্বর থেকে ধান-চাল সংগ্রহে নামছে সরকাররংপুরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণ হয় না কেনসরকারকে ধান দিতে কৃষকদের অনীহাসাড়ে ১০ হাজারের টার্গেটে সংগ্রহ দুই টন ধান

এ বিভাগের আরো খবর