কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গত মৌসুমের মতো এবারও ব্যর্থ হয়েছে রংপুর খাদ্য বিভাগ। চলতি বোরো মৌসুমে আট উপজেলার কৃষকের কাছ থেকে ১৭ হাজার ৪০৩ টন ধান কেনার কথা থাকলেও নেয়া হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ১৮২ দশমিক ৪৪০ টন।
কৃষক নেতাদের অভিযোগ, ধান সংগ্রহের জন্য কৃষক বাছাইয়ের যে প্রক্রিয়া, তা স্বচ্ছ না। প্রকৃত কৃষকরা এ কারণে ধান দিতে পারছেন না। তবে খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা তাদের কাছে ধান বিক্রি করেন না।
এর আগের আমন মৌসুমে ১০ হাজার ৩৮২ টন ধান সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত থাকলেও কেবল পীরগঞ্জ থেকে কেনা হয়েছে ২ টন। অন্য সাত উপজেলা থেকে এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি জেলা খাদ্য বিভাগ।
ধান দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ কৃষকরা
রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক আশরাফুল আলম বলেন, ‘কোন দিন কীভাবে লটারি হয়েছে, আমরা জানি না। কম হোক, বেশি হোক, আমরা গ্রামে ধান বিক্রি করেছি।
‘অনেকের থেকে শুনেছি, এর ওর নাম লটারিতে উঠেছে। ওদের ধান কোনোদিন বাড়িতে গেছে বলে দেখিনি। ওরা কীভাবে কৃষক হলো? মৌসুমে ধান কমদামে বিক্রি করেছি। এখন এসব কথা বলে কোনো লাভ নাই।’
কৃষক আরিফুল ইসলাম, মজিবর রহমান, জয়নাল আবেদীনসহ অনেকেই জানালেন, লটারিতে তাদের নাম ধান বিক্রয়কারী কৃষকের তালিকায় ওঠেনি।
যেভাবে ধান সংগ্রহ হয়
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমন ও বোরো মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে ধান কেনার জন্য লটারি করে উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটি।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এই কমিটির সভাপতি। এর সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ কয়েকজন।
উপজেলায় ধান চাষ করেছেন এমন কৃষকের তালিকা থাকে কৃষি অফিসে। তাদের মধ্য থেকে যারা কৃষি ভর্তুকি পান, তাদের নাম যায় ক্রয় কমিটির প্রধানের কাছে। এটি সরবরাহ করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
ওই তালিকা থেকে লটারির মাধ্যমে কৃষক বাছাই করে ক্রয় কমিটি। বাছাইয়ের তালিকা উপজেলা চত্বর ও উপজেলা খাদ্যগুদামের সামনে টানিয়ে দেয়া হয়।
এই প্রক্রিয়ার সময় কৃষকরা কোথাও উপস্থিত থাকেন না। অনেকে জানেনই না যে তার নাম লটারিতে উঠেছে।
এতে দেখা যায়, তালিকায় থাকা অনেক কৃষক ধান দিচ্ছেন না। আবার ধান থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম নেই বলে বিক্রি করতে পারছেন না অনেকে। এসব কারণে সংগ্রহের লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না।
রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, ‘ধান দেয়ার জন্য যে তালিকা অফিসের সামনে ঝোলানো হয়, তা কর্মকর্তাদের করা, নাকি কোনো কৃষকের করা, সেটি বোঝা মুশকিল। কারণ কৃষকরা জানেনই যে তাদের নাম কোনো লটারিতে দেয়া হচ্ছে, কিংবা লটারিতে উঠেছে। জানলে তো তারা অবশ্যই ন্যায্যমূল্যে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতেন।
‘নানা অজুহাত খাঁড়া করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান না কিনে দালালদের মাধ্যমে তালিকায় কয়েক জনের নাম তোলা হচ্ছে। এতে দালাল-ফড়িয়া ও কিছু অসাধু কৃষি ও খাদ্য কর্মকর্তা লাভবান হচ্ছেন। তালিকায় স্বচ্ছতা থাকতে হবে। কৃষকদের উপস্থিতিতে লটারি করতে হবে।’
পলাশ মনে করেন, হাটে-বাজারে সরকারি উদ্যোগে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উচিত।
খাদ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকৃত কৃষকের নাম দেয়ার দায়িত্ব কৃষি বিভাগের। এটি প্রচারের দায়িত্ব তথ্য বিভাগের। পরিসংখ্যান বিভাগ তালিকা সংরক্ষণ করে সমন্বয় করবেন। সব মিলিয়ে যে তালিকা আসবে, সেখান থেকে খাদ্য বিভাগ লটারি করবে। তবে, কৃষি বিভাগ তাদের কাজ ঠিকমতো করে না। সমন্বয়হীনতা রয়েছে তথ্য ও পরিসংখ্যান বিভাগেরও।
‘লটারি হওয়া উচিত কৃষকের উপস্থিতিতে’
দীর্ঘদিন কৃষি নিয়ে কাজ করেন রংপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আফতাব হোসেন। তিনি মনে করেন, উপজেলায় নির্দিষ্ট দিনে প্রকৃত কৃষকদের উপস্থিতিতে লটারি করতে হবে। বিজয়ীদের নাম-মোবাইল ফোন নম্বরসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই ধান সংগ্রহ সঠিকভাবে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন যে প্রক্রিয়ায় ধান কিনতে লটারি করে কৃষকের নাম বাছাই করা হচ্ছে, তাতে কোনোভাবেই প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা সম্ভব না। এই প্রক্রিয়ায় দালাল, ফড়িয়ার দাপট বেড়ে যাবে, যাচ্ছেও। অস্বচ্ছতা আসবে খাদ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে; সে অভিযোগও এর মধ্যে উঠে আসছে। এভাবে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব না।’
আফতাব আরও জানান, খাদ্য বিভাগ যেভাবে কৃষকের কাছ থেকে শুকনো ধান কিনতে চায়, তা কখনই সম্ভব নয়। মাড়াই মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে ধান শুকিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করলে লক্ষ্যও পূরণ হবে, কৃষকরাও লাভবান হবেন।
দায় কৃষকের, বলছে খাদ্য বিভাগ
রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত আমন মৌসুমে ধান কম কেনা হলেও এবার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক সংগ্রহ করা হয়েছে। এটা অনেক ভালো অর্জন।’
লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজার দর এবং সংগ্রহমূল্য কাছাকাছি থাকায় কৃষকরা ধান দিতে আগ্রহী হন না।
তিনি জানান, এ মৌসুমে বোরো ধানের সরকারি দাম ছিল প্রতি কেজি ২৭ টাকা। সে অনুযায়ী প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ৮০ টাকা। স্থানীয় বাজারে কৃষক ধান বিক্রি করেছে কেজিপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ টাকায়। তাদের ক্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পরিবহন খরচ দিতে হয় বলে সরকারি দাম কৃষকদের পোষায় না। এ কারণে তারা ধান দিতে আগ্রহ পান না।
তিনি বলেন, ‘যাদের নাম লটারিতে উঠে তাদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে, ইউনিয়ন পরিষদে, খাদ্য অফিসে, অনলাইনে দেয়া হয়। মাইকিং করা হয়। আসলে যখন কৃষকরা বাজারে ভালো দাম পায় তখন তারা সরকারি গুদামে ধান দিতে চায় না।’
কৃষকদের উপস্থিতিতে লটারি করার দাবির বিষয়ে আব্দুল কাদের বলেন, ‘হাটবাজারে গিয়ে ধান কেনা সম্ভব নয়। আমরা যে ধান কিনি, সেই ধান উন্নত মানের, শুকনো। যে ধান কেজিতে ২৮ টাকা দরে কেনা হয়, তা মিলাররা ২৯ টাকা দরে কিনে সে অনুযায়ী চাল দেন। আর কৃষক বাজারে যে ধান বিক্রি করেন তাতে কাঁচা, চিটি, পাতান, খুদ বেশি হয়।
‘ধান কেনার সময় অনেক কিছুই বিবেচনা করে কিনতে হয় যাতে সরকার লাভবান হয়। হাট থেকে কাঁচা, পাতান থাকা ধান কিনলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাছাড়া বাজারে গিয়ে ধান কেনার মতো লোকবল আমাদের নেই।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য