ফরিদপুরের মধুখালীতে কীটনাশক পান করে বাবা-ছেলে অসুস্থ হওয়ার ৫ দিন পর মৃত্যু হয় ছেলের। এর একদিন পর মারা গেলেন বাবাও।
বুধবার ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৪৫ বছর বয়সী বাবা হান্নান শেখ।
এর আগে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ২ বছরের শিশু আয়ান শেখ মারা যায়।
মধুখালী পৌরসভার গোপালপুর এলাকায় গত ২২ সেপ্টেম্বর বাবা-ছেলের কীটনাশক পানের ঘটনা ঘটে।
মধুখালী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধুখালী পৌরসভার গোপালপুর গ্রামের আকুব্বর শেখের বড় ছেলে হান্নান শেখ। পেশায় কৃষক হান্নান ৩ বছর আগে উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের নিখরিয়া গ্রামের সুফিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
বেশ কিছু দিন ধরে সুফিয়া ও হান্নানের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় দুই মাস আগে সুফিয়া দুই বছরের শিশু সন্তান আয়ান ও স্বামী হান্নানকে ছেড়ে চলে যান।
এ অবস্থায় শিশু সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন হান্নান। স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি।
গত ২২ ডিসেম্বর রাতে হান্নান তার সন্তানকে আগাছা নাশক পান করিয়ে নিজেও তা গ্রহণ করেন।
বিষয়টি আশপাশের মানুষেরা বুঝতে পেরে শুক্রবার সকালে বাবা ও ছেলেকে অচেতন অবস্থায় মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
পাঁচদিন চিকিৎসার পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বাবা-ছেলেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন ফরিদপুরের চিকিৎসকরা।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার ঢাকায় নেয়ার পথে প্রথমে শিশু আয়ান মারা যায়। আর হান্নানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে মারা গেছেন হান্নানও।
মধুখালী থানার ওসি শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় মৃত হান্নানের ভাই জাহাঙ্গীর আলম মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। বাবা ও ছেলের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’