বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) কার্ডিওলজি বিভাগে সঠিকভাবে চিকিৎসা না দেয়ায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মৃত রেনু বেগম নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম চৌধুরীর স্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ২ নম্বর সেক্টরের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রবের মেয়ে।
রেনুর ছেলে আরাফাত চৌধুরী বলেন, আমার মা ১৫ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। মা সুস্থ হওয়ার আগেই ২১ আগস্ট তাকে ছাড়পত্র দেন ডাক্তার মুশফিকুজ্জমান। এ নিয়ে তার সঙ্গে তর্ক হয়।
‘কারণ বিভাগীয় প্রধান বলেছিলেন আরও দুই দিন অবজারভেশনে রাখার জন্য। একপর্যায়ে মুশফিকুজ্জামান আমাকে মারতেও উদ্যত হন। এর সূত্র ধরে আমার মা এরপর যতবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ততবার প্রতিহিংসাবশত মুশফিকুজ্জামান ছাড়পত্র দিয়েছেন।
‘এরপর ২৩ আগস্ট ও ২৭ আগস্ট দুইবার হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ছাড়পত্র দেয়া হয়। পরে ২৭ নভেম্বর পুনরায় অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৮ নভেম্বর সকালে ডা. মুশফিকুজ্জামান এসে হাসপাতাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় রিলিজ দেন আমার মাকে। ২৯ নভেম্বর আমার মায়ের মৃত্যু হয়।’
থানায় মামলা করতে গেলে ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেখে মামলা নেয়া হয়নি বলে দাবি করেন আরাফাত। বলেন, ‘পরে আমি বিষয়টি স্বাস্থ্যসচিবকে জানাতে চেয়েছিলাম। তবে হাসপাতালের পরিচালক আশ্বাস দিয়ে থামিয়ে দেন আমাকে।’
এরপর ১৮ ডিসেম্বর হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ দেন আরাফাত।
রেনু বেগমের স্বামী আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘ছাড়পত্র দেয়া নিয়ে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তর্ক হওয়ার পর যখন সঠিকভাবে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন না ওই চিকিৎসক তখন আমি তার কাছে হাত জোড় করেও ক্ষমা চেয়েছি। তার পরও তিনি আমার স্ত্রীর সঠিক চিকিৎসা করেনি। যখনই তাকে ভর্তি দেখেছে, তাকে ছাড়পত্র দিয়েছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মুশফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে লিখিত জবাব দিয়েছি কর্তৃপক্ষকে।’
হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রোগীর স্বজনের লিখিত অভিযোগ পেয়ে পরদিন তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে দোষী প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’