ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, আদিবাসীদের জন্য বিশেষ গুচ্ছগ্রাম করার কথা ভাবছে সরকার। ভূমিহীনতাজনিত সমস্যা সমাধানকল্পে বিশেষ গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বুধবার রাজধানীতে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
নেটজ পার্টনারশীপ ফর ডেভলপমেন্ট এন্ড জাস্টিস এ সেমিনারের আয়োজন করেছিল সিরডাপ মিলনায়তনে।
এতে প্রধান অতিথি সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আদিবাসীদের ভূমিহীনতাজনিত সমস্যা সমাধানকল্পে বিশেষ গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বিবেচনাধীন। পাহাড়ে ডিজিটাল সার্ভে ব্যাপক আকারে শুরু করতে পারলে ভূমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও সহিংসতাগুলোর শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে।’
নেটজ পরিচালক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা। তিনি আদিবাসীদের ভূমিসংক্রান্ত সহিংসতাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানকল্পে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সুপারিশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আদিবাসীরা মনে করেন, তাদের ভূমি অধিকার বিষয়ে বর্তমান সরকার অনেক আন্তরিক। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের আন্তরিকতার অভাবে দ্বন্দ্বগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হচ্ছে না।’
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘আদিবাসীরা তাদের ভূমি অধিকার রক্ষায় সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্ত হয় স্থানীয় রাজনৈতিক চক্র থেকে। এর ফলে জাতীয় পর্যায়ের সরকারি উদ্যোগগুলোর সুবিধা আদিবাসীরা পাচ্ছেন না।’
ডাসকো ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী আকরামুল হক বলেন, ‘আদিবাসীদের ভূমি অধিকার রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদিবাসীদের বসবাসের জায়গা ও ব্যবহৃত খাস পুকুর আদিবাসী ছাড়া অন্য কাউকে লিজ না দেয়া উচিত।’
আদিবাসী নেতা সঞ্জীব দ্রং ভূমি অধিকারসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের যথাযথ বাস্তবায়ন দাবি করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আদিবাসীরা প্রকৃতির সাথে বসবাস করে। তাদের জীবনবোধ ও সংস্কৃতি আলাদা। তাদের বেঁচে থাকার এই স্বকীয়তাকে সম্মান করতে হবে এবং সেভাবে থাকার অধিকার দিতে হবে।’
সেমিনারে আলোচকরা ভূমি সংক্রান্ত যে কোন আইন প্রণয়ন ও সংস্কারে সুশীল সমাজসহ সংশ্লিষ্ট অংশীদের মতামত ও পরামর্শ নেয়ার দাবি তোলেন। সেমিনারে বিভিন্ন সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।