বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘যুগপতের সঙ্গীদের’ ডেকেও গোলাপবাগে পেল না বিএনপি

  •    
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:৫৭

সমাবেশের আগের দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে সকল নেতা-কর্মী, সকল পর্যায়ের জনগণ ও আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে যুগপৎ আন্দোলনে যেসব দল, ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আগামীকাল গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ আমরা বেলা ১১টা থেকে শুরু করব। আমরা আমাদের সকল নেতা-কর্মী, সমর্থক, এবং অন্যান্য দল যারা ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করবে, তাদের সকলকে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা আগামীকাল শান্তিপূর্ণভাবে এই সমাবেশ সফল করার জন্য উপস্থিত হবেন।’

প্রায় দুই যুগ ধরে চালিয়ে যাওয়া জোট ভেঙে গিয়ে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের পরিকল্পনাটি আবার হোঁচট খেল।

রাজধানীর গোলাপবাগে বিভাগীয় সমাবেশে দলগুলোকে অংশ নিতে আগের দিন বিএনপি উদাত্ত আহ্বান জানালেও কোনো দলের নেতারা তাতে যোগ দেয়নি। এই সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণার যে কথা জানানো হয়েছিল, ঘোষণা হয়নি সেটিও।

এমনকি এই সমাবেশে যাবেন বলে গত ২৮ অক্টোবর ঘোষণা দেয়া মাহমুদুর রহমান মান্নাকেও দেখা যায়নি সমাবেশে।

সরকারবিরোধী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বিএনপির যে পরিকল্পনা, তাতে যত সম্ভব তত বেশি দলকে মাঠে নামাতে চায় দলটি। একাত্তরে পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে যেন অন্য দলের কোনো আপত্তি না থাকে, সে জন্য এই জোটও ভেঙে দেয়া হয়েছে।

কয়েক মাস ধরে লুকোচুরির পর বিএনপির সমাবেশের দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধির প্রশ্নে জোট ভেঙে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির এই বিভাগীয় সমাবেশ আগের ৯টি সমাবেশের ধারাবাহিকতা হলেও রাজধানীর এই জমায়েতকে ঘিরে রাজনীতিতে ছিল উত্তাপ। এখান থেকে কী ঘোষণা আসবে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু না জানালেও বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে, যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা তারা ঘোষণা করবেন।

সমাবেশ স্থল নিয়ে নানা ঘটনা শেষে শুক্রবার যখন গোলাপবাগ মাঠ চূড়ান্ত হয়, তার কিছুক্ষণ পর বিএনপির পক্ষ থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এসে যা বলেন, তাতে যুগপতের সঙ্গীদেরকে জনসভায় যোগ দেয়ার ইঙ্গিত মেলে।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে সকল নেতাকর্মী, সকল পর্যায়ের জনগণ ও আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে যুগপৎ আন্দোলনে যে সব দল, ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।

সমাবেশের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাব্য সঙ্গীদেরকে গোলাপবাগে যাওয়ার আহ্বান জানান

‘আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আগামীকাল গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ আমরা সকাল ১১ টা থেকে শুরু করব। আমরা আমাদের সকল নেতাকর্মী, সমর্থক, এবং অন্যান্য দল যারা ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করবে, তাদের সকলকে এই প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা আগামীকাল শান্তিপূর্ণভাবে এই সমাবেশ সফল করার জন্য উপস্থিত হবেন।’

গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যা বলেন, তাতে বোঝা যায়, যুগপতের সম্ভাব্য সঙ্গীরাও ১০ ডিসেম্বর সক্রিয় হবেন।

সেদিন এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কোনো জোট নেই। আমরা বলেছি, অন্য দলগুলো গণতন্ত্রের জন্য তাদের নিজস্ব কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচি পালিত হবে একই সঙ্গে, যাকে আমরা যুগপৎ বলে থাকি। সবাই নিজের পছন্দের এলাকা বা অফিসে কর্মসূচি পালন করবে।’

সমমনা যে দলগুলো তারা কি তাহলে ১০ ডিসেম্বর আলাদা আলাদা সমাবেশ করবে?- এমন প্রশ্ন রাখেন আরেকজন গণমাধ্যমকর্মী।

ফখরুল জবাব দেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনে মানেই এটা।’

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, তাদের জোট আর নেই। এখন সব দল যুগপৎ কর্মসূচি পালন করবে। ১০ ডিসেম্বর সেই কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণার কথা তিনি জানান গত ৪ ডিসেম্বর

গত ৪ ডিসেম্বরও মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা হবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির এক আলোচনায় সেদিন তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে অনেকগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা ন্যূনতম বিষয়ে একমত হয়েছি। আশা করি এই বিষয়গুলোকে আমরা সামনে নিয়ে আসব। আমাদের পুরো দাবিদাওবা, রূপরেখা জনগণের সামনে নিয়ে আসব।’

বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেয়ার পর বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির জমায়েত দেখে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া মাহমুদুর রহমান মান্না দেখান উচ্ছ্বাস। গত ২৮ অক্টোবরও তিনি জানিয়ে দেন, বিএনপির ঢাকার সমাবেশে তিনি যোগ দিচ্ছেন।

গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে জামায়াতপন্থি সংগঠন ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম’এর একটি আলোচনায় অংশ নিয়ে মান্না বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর সমাবেশ হবে। আর সেদিন কী হবে আমি তো কল্পনাই করতে পারি না। সত্যি সত্যি বলছি। কত মানুষ হবে! আর ওই খানে বলতে হবে আর যাব না, তুই যা তারপর যাব।’

তবে মান্না এদিন গোলাপবাগে যাননি। তার দল সেই কর্মসূচির দিন রাজপথে কোনো কর্মসূচিও রাখেনি।

২৪ ডিসেম্বরের গণমিছিলে ১১ দলের অংশ নেয়ার ঘোষণা

গোলাপবাগের সমাবেশে অংশ না নিলেও এই সমাবেশে ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ে বিএনপি আগামী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় যে মিছিলের ডাক দিয়েছে, তাতে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ১১টি দল।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।

গত ২৮ অক্টোবর এক আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, তিনি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির জনসভায় যোগ দেবেন। তবে দিনভর তাকে গোলাপবাগে দেখা যায়নি

এসব দলগুলো বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের শরিক হিসেবে বছরের পর বছর এক সুরে কথা বলে গেছে এবং জোট আর নেই বলে বিএনপির পক্ষ থেকে আসা বক্তব্যের পর কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

যে ১১টি দল এই মিছিলে অংশ নেয়ার কথা জানিয়েছে, তাদের মধ্যে আছে কল্যাণ পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি বা এনপিপি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি বা জাগপা, বাংলাদেশ এলডিপি, ইসলামী ঐক্য জোটের একাংশ, এনডিপি, ন্যাপ-ভাসানী, মুসলিম লীগ, জমিয়াতে ওলামা ইসলামের একাংশ এবং সাম্যবাদী দলের একাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর