রাজধানী নয়াপল্টনে বুধবার বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় নিহত মকবুল হোসেনের দেহে গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে সুরতহাল প্রতিবেদনে।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা মনে করছেন, নিহতের শরীরে যেসব কালো দাগ রয়েছে তা বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে তৈরি হতে পারে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর মকবুলের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন থানার পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ মাতুব্বর।
তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিহতের শরীরে কালো দাগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে স্প্লিন্টারের দাগ। ময়নাতদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে।’
মকবুলের শরীরে গুলির আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া গেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো এক্সপার্ট না ভাই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরে বোঝা যাবে।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বুধবার বেলা ৩টার দিকে সংঘর্ষের সময় গুলিতে আহত হন ৪৩ বছর বয়সী মকবুল হোসেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে মকবুল হোসেনের স্ত্রী হালিমা বেগম ও মেয়ে মিথিলা (মাঝে)
খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর হাসপাতালে ছুটে আসেন মকবুলের স্বজনরা। এ সময় নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তার ভাই গুলির আঘাতে মারা গেছেন।
স্বজনদের এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের উপপরিদর্শক ফরহাদ মাতুব্বর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে বলছেন সেটা জানি না ভাই। আমি যেটা প্রাথমিকভাবে দেখেছি সেভাবে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জনগণের চলাচলের রাস্তায় বিঘ্ন ঘটায়। পুলিশ রাস্তা ছেড়ে যেতে বললে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। সেই ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত অবস্থায় মকবুলকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে মকবুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়। ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. সোহেলী মঞ্জুরী তন্নী ময়নাতদন্ত করেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহ বুঝে নেন মকবুলের মেজ ভাই নুর হোসেন।
তিনি জানান, মিরপুরের বাসায় জানাজা শেষে কালশী কবরস্থানে মকবুলকে দাফন করা হবে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি মকবুলের স্ত্রীকে সান্ত্বনা এবং কিছু আর্থিক সাহায্য দেন।
হাসপাতালে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।