ফেসবুকে ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট দেয়ার অভিযোগে দ্বিতীয়বার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ঝুমন দাস জামিনে মুক্ত হয়েছেন। সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বুধবার বিকেলে বের হয়ে ফের বাকস্বাধীনতার দাবি তুলেছেন তিনি।
ঝুমন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত একজন মানুষ। দেশ যেহেতু স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে, আমি চাই বাকস্বাধীনতা। যেন এটি সুন্দরভাবে প্রকাশ করা যায়। আমি আমার বাকস্বাধীনতা প্রকাশ করতে চেয়েছি, কোনো অপরাধ করিনি।’
ফেসবুকে উসকানিমূলক ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয় এমন পোস্ট না দেয়ার শর্তে ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন সুনামগঞ্জের শাল্লার এই যুবক।
আদালতের দেয়া শর্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তা আমি অবশ্যই মেনে চলব। যে শর্তগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো আমি দেখেছি এবং তা আমি পালন করব।’
এর আগে গত বছরের ১৬ মার্চ হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।
এর জেরে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে উত্তেজনা দেখা দিলে সে রাতে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরদিন সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপারের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
এর ছয় মাস পর হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হয়ে ঝুমন বলেছিলেন, ‘আমি মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমাদের পুরো পরিবার স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি। আমাদের পরিবারে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আছেন। আমি কোনো দল করি না। তবে আমি স্বাধীনতার সপক্ষে বিশ্বাসী। মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।’
এর প্রায় ১১ মাস পর ফের গ্রেপ্তার করা হয় ঝুমন দাসকে। তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ।