সরকারিভাবে জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের বিধান রেখে ‘জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে করা আইন ‘জাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন প্রণয়নে এই বিল আনা হয়েছে।
রোববার বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
বিলে ধর্মমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে জাকাত বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর সদস্য হবেন ধর্ম সচিব (ভাইস চেয়ারম্যান); ধর্ম, অর্থ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন করে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তা, সরকার মনোনীত ৫ জন আলেম, সরকার মনোনীত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর দুইজন প্রতিনিধি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সদস্য সচিব)। বছরে এই বোর্ডের কমপক্ষে দুটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। বোর্ডের পরিচালনা ব্যয় বহন করবে সরকার।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জাকাত সংগ্রহ, বিতরণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরির ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। কমিটি গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণে কেন্দ্রীয়, সিটি কপোরেশন, বিভাগ, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক কমিটি গঠন করতে পারবে।
জাকাত তহবিল গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে সংগৃহীত জাকাত; প্রবাসী বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক, কোনো বিদেশি মুসলিম বা কোনো সংস্থায় জমাকৃত জাকাতের অর্থ থেকে পাওয়া জাকাত এবং শরিয়াহসম্মত অন্য কোনো উৎস থেকে পাওয়া জাকাত। শরিয়াহসম্মত খাত ব্যতীত অন্য কোনো খাতে জাকাতের অর্থ ব্যয় বা বিতরণ করা যাবে না।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাকাত দারিদ্র্য বিমোচন ও পুনর্বাসনের হাতিয়ার। জাকাত কএনা স্বেচ্ছামূলক দান নয়, বরং জাকাত ধনীর সম্পদ থেকে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত বাধ্যতামূলকভাবে দেয়া নির্দিষ্ট অংশ। দেশে ব্যক্তিগত পর্যায়ে জাকাত ব্যবস্থা চালু থাকলেও নানা কারণে তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাচ্ছিল না। জাকাতের মাধ্যমে এক সময় সারা মুসলিম জাহানে দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হয়েছিল। এই আইন পাস হলে জাকাত তহবিল দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে করা ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন করতে ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।