বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৫ বছর ধরে শিকলে বন্দি মেধাবী ছাত্র রুহুল আমিন

  • রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি   
  • ১৯ জুন, ২০২৫ ১৬:১৪

শিক্ষার্থী লেখাপড়া করবে, খেলাধুলা করবে, এটাই স্বাভাবিক। তারওপর একজন কোরআনে হাফেজ, সে তো বসে থাকার কথা নয়, কোরআন তেলোয়াত করে, মাহফিল করে মঞ্চ মাতানোর কথা যার, বিধির নির্মম পরিহাস, সে মেধাবী রুহুল আমিন এখন লোহার শিকলে বন্ধি। একেই বলে মেধাবীরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধিকতায় আস্টে-পিস্টে আটকে আছে। রূপগঞ্জের জাঙ্গীর এলাকার হতদরিদ্র ঘরের সন্তান রুহুল আমিন। হয়েছিল কোরআনে হাফেজ, মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় পেয়েছিল জিপি-এ গ্রেড। এমনকি আজান প্রতিযোগীতায় জেলা পর্যায়ে হয়েছিল তৃতীয় স্থান। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার দুই দিন পর হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে। মানুষ দেখে অস্বাভাবিক আচরণ করার কারণে রুহুল আমিনকে ১৫ বছর ধরে জরাজীর্ণ একটি ঘরে শিকলে বন্দি করে রেখেছেন তার পরিবারের লোকজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, রূপগঞ্জের সদর ইউনিয়নের জাঙ্গীর দারকাবো টেক এলাকার হতদরিদ্র ইদ্রিস আলীর চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট রুহুল আমিন। বড় ছেলে সিএনজি চালক, মেজো ছেলে রং মিস্ত্রি আর সেজো ছেলে পেশায় স্যানেটারির কাজ করেন। অসুস্থতার কারণে রুহুল আমিনের বাবা ইদ্রিস আলি কোনো কাজ করতে না পারায় সংসারে বেড়েছে অভাব অনটন। পারছে না চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করতে। এলাকাবাসী জানায়, ছোট বেলা থেকেই মেধাবী হওয়ায় রুহুল আমিনকে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করা হয় স্থানীয় ফাজিল মাদ্রাসায়। হয়েছিলেন কোরআনে হাফেজ। ২০০৬ সালে জেলা পর্যায়ে জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতি প্রতিযোগিতায় আজানে তৃতীয় স্থান অর্জন করে সে। ২০১০ সালে দাখিল পরীক্ষার শেষের দিকে অসুস্থবোধ করে সে।

এদিকে ২০১৮ সালে পরিবারের লোকজন এলাকাবাসীর সহায়তায় রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যায় তার চিকিৎসার জন্য। ২০২১ সাল পর্যন্ত সেখানে চলে তার চিকিৎসা। সর্বশেষে ২ মাস সেখানে ভর্তি রাখা হয়। কিছুটা উন্নতির দিকে যাচ্ছিল তার অবস্থার। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন রুহুল আমিনকে রাজধানী যেকোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে সমাজসেবা অধিদপ্তর সার্বিক সহায়তা করবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি জানা ছিল না। রুহুল আমিনের উন্নত চিকিৎসার জন্য যা করা দরকার সব ব্যবস্থা করব। আর্থিক সহায়তা লাগলে উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে নিয়ে সবাই মিলে ব্যবস্থা করব।

এ বিভাগের আরো খবর