শীতকালীন আগাম সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে এবার শেরপুরে। ব্রহ্মপুত্র নদের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে সবজি আবাদ করে এবার কৃষকের মুখে মুখে হাসি। তবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ফুলকপির ডায়মন্ডব্যাক মথ রোগ নিয়ে।
স্থানীয় নামে ‘সেঙ্গা’ জাতীয় পোকার আক্রমণে পচে যাচ্ছে চাষিদের ফুলকপি, মরে যাচ্ছে গাছও!
সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৬ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চাষ করেছিলেন শেরপুরের ব্রহ্মপুত্রপারের কৃষক শমসের আলী। সম্প্রতি তার গাছগুলোতে পচন ধরেছে।
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত শমসের বলেন, ‘আগাম বেচতে ফুলকফি লাগাইলাম। কিন্তু পচা যে ধরল তা তো আর ছাড়াবার পারছি না। দোকান থেকে সার-বিষ এনে দিলাম। কিন্তু কী যে দিল- কাজ তো হচ্ছে না! এখন আমরা কী করব!’
একই অবস্থা চরপক্ষীমারী এলাকার ময়না বেগমের। জানালেন, অনেক চেষ্টা করেও ফুলকপির ক্ষেত থেকে তিনি পোকা সরাতে পারছেন না। জমিতে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে সেই টাকা ওঠানো নিয়েই এখন যত চিন্তা।
শুধু শমসের আর ময়না নন, ফুলকপি চাষ করা বেশির ভাগ কৃষকের মাঠেই দেখা গেছে এমন চিত্র। নির্দিষ্ট কীটনাশক না পেয়ে তাদের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক। মাঠপর্যায়ে এখনও পৌঁছায়নি কৃষি অফিসের পরামর্শও।
স্থানীয় কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, ‘কোনো কৃষি অফিসার আমাদের খোঁজ নিতে আসেন না।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বেশি লাভের আশায় আগাম লাগাইছিলাম। কিন্তু এই সেঙ্গায় তো সব শেষ করে দিচ্ছে। বাজারের বিষে কাজ হচ্ছে না। কৃষি অফিসাররাও কোনো পরামর্শ দিচ্ছেন না।’
এ বিষয়ে শেরপুর খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জেলায় ইতোমধ্যে ১০০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ করা হয়েছে। ক্ষেতে ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়া পোকাটির নাম ডায়মন্ডব্যাক মথ। নির্দিষ্ট বালাইনাশক ব্যবহার করে ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব। আমরা মাঠপর্যায়ে দ্রুত পরামর্শ দেয়ার ব্যবস্থা করছি। ইতোমধ্যেই কার্যত্রম শুরু হয়েছে।’