বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোট বন্ধে ইসির সিদ্ধান্তে সাবেকদের সমর্থন

  •    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৯:১৩

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি ওনারা বলেছেন সেটি সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানিকভাবে ঠিক হয়েছে। ওনারা আমাদের মুরব্বিজন। গুরুজন হিসেবে ওনারা আমাদেরকে সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে বলেছেন।’

চরম অনিয়মের কারণে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঢাকার নির্বাচন ভবন থেকে সিসিটিভি ক্যামেরায় বুথের দৃশ্য মনিটরিং করে এ সিদ্ধান্ত নেয় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

নির্বাচন বন্ধের এ সিদ্ধান্ত ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীও রয়েছেন। তবে এ সিদ্ধান্তে কমিশনের সাবেক কর্মকর্তারা সমর্থন জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, আইন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী বর্তমান কমিশন সঠিক সিদ্ধান্তটিই নিয়েছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বুধবার সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি ওনারা বলেছেন সেটি সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানিকভাবে ঠিক হয়েছে। ওনারা আমাদের মুরব্বিজন। গুরুজন হিসেবে ওনারা আমাদেরকে সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে বলেছেন।’

গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে সব কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ঢাকার নির্বাচন ভবনে বসে মনিটরিং করে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। ভোটে অনিয়ম ধরা পড়লে ভোটগ্রহণের চার ঘণ্টার মাথায় ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫১টিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক পর্যায়ে ভোট শেষের দেড় ঘণ্টা আগে এই ভোট বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ভোট বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে কমিশন৷

এসব বিষয়ে মতামত নিতে ও অভিজ্ঞতা জানতে সাবেক সিইসি, ইসি ও সচিবদের নিয়ে বুধবার বৈঠকে বসে সাংবিধানিক এ সংস্থা। তিনজন সাবেক সিইসি, সাবেক চার কমিশনারসহ সাবেক ইসি সচিব ও অতিরিক্ত সচিবরা এই বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় ভোটের অনিয়মকে ‘দৈব-দুর্বিপাক’ উল্লেখ করে গাইবান্ধা-৫ আসনের এই উপনির্বাচনের সময় আরও ৯০ দিন বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ আসনে ২০ জানুয়ারির মধ্যে ভোট করতে চায় ইসি।

সিইসি বলেন, ‘আজ আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দেইনি। তাদের কথা শুনেছি। সার্বিক বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাদের ডেকেছিলাম। এটা সত্য, গাইবান্ধার ঘটনায় আমাদের আরও এনটাইটেল্ড হওয়া প্রয়োজন ছিল। ওনাদের তরফ থেকে কোনো গাইডেন্স আছে কিনা, কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন সেসব আমরা জেনেছি।’

তিনি বলেন, 'এটা ক্রিটিক্যাল ছিল। প্রথমবারের মতো বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশন নিয়েছে এবং এটা সব মহলে যথেষ্ট সেনসেশন ক্রিয়েট করেছে। এটা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষে বক্তব্যও হয়েছে।’

ভোট বন্ধ করার পর সাবেকদের কাছ থেকে নতুন করে মূল্যায়ন কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মূল্যায়নের খুবই প্রয়োজন রয়েছে। যেকোনো বিষয়ে বিচারক হিসেবে আমরা সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করি- বিষয়টি ঠিক হয়েছে কিনা।

‘আমরা শুদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছি কি নেইনি- এ বিষয়ক অভিমতে উঠে এসেছে যে আমরা সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছি। তারপরও এটা সঠিক নাও হতে পারে। কোর্টে গিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। তখন তারা যদি বলতেন যে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেইনি তখন আমাদের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার প্রয়োজন পড়তো।’

সিইসি বলেন, ‘ওনারা সবাই একমত পোষণ করেছেন যে আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে। একইসঙ্গে তারা বলেছেন, এগিয়ে যান। আমরা ওনাদের কাছ থেকে যে গাইডেন্স ও পরামর্শ পেয়েছি, বক্তব্য শুনেছি, তা আমাদের এডুকেটেড করেছে, ইনস্পায়ার করেছে।’

গাইবান্ধায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ইসির উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে- সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের এমন মন্তব্যের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘অপেক্ষা করুন। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। রিপোর্টটা আসুক। তারপর আপনারা দেখেন আমরা কোনো পদক্ষেপ নেই কিনা।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএম নিয়েও পক্ষ-বিপক্ষে কথা হয়েছে। অধিকাংশই পক্ষে বলেছেন। এটা নিয়ে জনমনে একটা নেগেটিভ পারসেপশন রয়েছে। এই পারসেপশনটা দূর করতে হবে।’

বেলা ১১ থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে বৈঠকে মোট ২৮ জনকে আমন্ত্রণ জানালেও উপস্থিত ছিলেন ১৪ জন। তারা হলেন- সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও মো. শাহনেওয়াজ; সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ ও এম এম রেজা এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নেন।

তাদের মধ্যে বিচারপতি আব্দুর রউফের মাগুরা উপনির্বাচন, কাজী রকিবের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও কে এম নূরুল হুদার ৩০ ডিসেম্বরের ভোট করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

সাবেক সিইসিদের মধ্যে এটিএম শামসুল হুদা ও আবু হেনা যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। আর বিতর্কিত এমএ আজিজ আমন্ত্রণ পাননি।

বর্তমান কমিশনের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান ও মো. আলমগীর বৈঠকে অংশ নেন। অপর নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর