রাজধানীর শুক্রাবাদে অনলাইনে সেবা নেয়ার কথা বলে অন্তঃসত্ত্বা বিউটিশিয়ানকে বাসায় ডেকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শ্যামলীতে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত তিনজনই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তারা বখে যাওয়া।’
অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে শেরে-বাংলা নগর থানা পুলিশ। বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি পুলিশ।
গ্রেপ্তার কৃতরা হলেন মো. রিয়াদ ও ইয়াছিন হোসেন ওরফে সিয়াম।
তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার সেই নারী সাভারে থাকতেন। সেখান থেকে তিনি তার একটি অনলাইন পেজের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে বাসায় গিয়ে নারীদের পার্লার সেবা দিতেন। অনলাইন পেজের সেই নাম্বারের সূত্র ধরে গত ১১ অক্টোবর এক নারী কণ্ঠের ফোন পান পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সেই বিউটিশিয়ান। তাকে জানানো হয় শুক্রাবাদ এলাকায় ফেসিয়াল সেবা দিতে হবে। এই তথ্যের ভিত্তিতে সাভার থেকে ওই বিউটিশিয়ান শুক্রাবাদের উদ্দেশে রওনা হন।
‘রাস্তায় আসতে আসতে সেবার আবেদনকারী ওই নারীর ভাই পরিচয়ে রিয়াদ তার অবস্থান সম্পর্কে ফোনে বার বার জানতে চান। সন্ধ্যার পর সেই নারীকে রিয়াদ শুক্রাবাদের তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তার বোনের জন্য অপেক্ষা করতে বলে রিয়াদ পরে তার আরও দুই বন্ধু সিয়াম ও জিতুকে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর খালি বাসায় তিনজন মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ করার পর সেই নারীকে রাস্তায় নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে তুলে দেন তারা।
আজিমুল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রথমে ধানমন্ডি থানায় যান। কিন্তু ঘটনাস্থল ধানমন্ডি থানায় না হওয়ায় পরে শেরে-বাংলা নগর থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শেরে-বাংলা থানায় মামলা করা হয়।’
সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তিনি। বলেন, ‘জিতু পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ধরনের ঘটনা অনেকটাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে উল্লেখ করে বিভাগের পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘বাসা বাড়িতে যেকোনো সার্ভিস দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহক এবং সেবাদানকারী ব্যক্তিদের আরও সতর্ক হতে হবে।’
এদিকে আসামিদের ছবি তোলার সময় সাংবাদিকদের কাছে গ্রেপ্তার সিয়াম এবং রিয়াদ দাবি করেন, তারা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তাদের ফাঁসানো হয়েছে।
তবে যে তরুণী প্রথম কল করে বিউটিশিয়ানকে ডাকেন তার সম্পর্কে এখনও তথ্য দেয়নি পুলিশ।