নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যে ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে চায়, তারা কেন তালিকাভুক্ত হতে চায় না, সেটি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তার দাবি, প্রথমত লভ্যাংশ দিতে হয় বলে, দ্বিতীয়ত. শেয়ারের দর ভালো পাওয়া যায় না বলে তারা তালিকাভুক্ত হতে চায় না।
বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালনে বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন সালমান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কেন ভালো কোম্পানি আসতে চায় না সেটা বুঝতে আমি ভালো কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছে, পুঁজিবাজারে আসলে শেয়ারের সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না। আর সবচেয়ে বড় যে সমস্যা সেটা হচ্ছে, এই বাজার ডিভিডেন্ড ড্রিভেন, ক্যাপিট্যাল গেইন ড্রিভেন না। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত হলে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে হবেই। কিন্তু ভালো কোম্পানিগুলো চায় তাদের মুনাফা তারা আবার বিনিয়োগ করবে আর ব্যবসা বাড়াবে।’
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সমিতি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ বা বিএপিএলসি এই আলোচনার আয়োজন করে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসি চেয়ারম্যন শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। আরেক বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএপিএলসির সাবেক সভাপতি আজম জে চৌধুরী।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বিএপিএলসির বর্তমান সভাপতি নির্বাচিত এম আনিস উদ দৌলা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিএপিএলসির সহসভাপতি এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
আলোচনায় কয়েকজন বক্তা বলেন, পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে দরকার ভালো কোম্পানি। কিন্তু ভালো কোম্পানি দেশের পুঁজিবাজারে আসছে না। এরপর কথা বলেন সালমান এফ রহমান।
কয়েকজন আলোচক বলেন, যে লিস্টিং রেগুলেশন আছে সেটা পরিবর্তন করা দরকার। এখন কোম্পানির শেয়ারের দাম নির্ধারণের যে পদ্ধতি আছে, সেটা ত্রুটিপূর্ণ। এই পদ্ধিতিতে ভালো কোম্পানি ভালো শেয়ারের দাম পাচ্ছে না।
তবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বর্তমানে যে পদ্ধতি আছে সেটা পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ আমরা চাই সব কোম্পানি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে না আসুক। অনেক কোম্পানি আছে তারা এই সুযোগ নিয়ে মানুষের টাকা মেরে দেবে। আমরা সেই সুযোগ বন্ধ করতে চাই।
‘তবে ভালো কোম্পানি আসতে চাইলে আমরা তাদের সুযোগ সুবিধা দিয়ে বাজারে নিয়ে আসব। আমরা নিশ্চিত করব তারা যেন শেয়ারের ভালো দাম পায়।’
বিএসইসি আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংঘের সদস্য। এই সংঘের নাম হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিস কমিশনস বা আইওএসসিও।
আইওএসসিও এর সদস্য দেশগুলো তাদের দেশের বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে, বিনিয়োগ শিক্ষা বাড়াতে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালন করে থাকে।
বিএসইসি ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ বাংলাদেশে পালন করে আসছে।