র্যাবের মতো অন্য বাহিনীর ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য রাখছেন, তা র্যাবে নিষেধাজ্ঞার পেছনে তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেছেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় তারাই তথাকথিত নিষেধাজ্ঞা ও ষড়যন্ত্রের হোতা।’
সোমবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা।
গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তখন থেকেই আওয়ামী লীগ দাবি করে আসছে, এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে বিএনপি-জামায়াতের লবিং ভূমিকা রেখেছে।
সম্প্রতি বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা ও গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর পর মির্জা ফখরুল বলে আসছেন, এভাবে গুলি করতে থাকলে পুলিশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে যুবদল কর্মী শাওন প্রধান নিহতের প্রতিবাদে পরদিন রাজধানীতে এক প্রতিবাদ সভায় ফখরুল পুলিশকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আপনারা কি চান- পুলিশের ওপর এভাবে স্যাংশন আসুক, বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ওপর স্যাংশন জারি করুক?’
এর ৯ দিন পর গতকাল রোববার বিএনপির আরেক সমাবেশে একই কথা বলেন বিএনপি নেতা। পুলিশকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় গুলি করবেন না বেআইনি নির্দেশ নিয়ে। ওই যেমন র্যাবের ওপরে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) এসেছে। ঠিক তেমনি যেকোনো বাহিনীর ওপরও স্যাংশন আসতে পারে। যদি না আইন না মেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে থাকে।’
কাদের মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পেছনে বিএনপির ভূমিকার প্রমাণ দিচ্ছেন ফখরুল নিজেই। তিনি বলেন, ‘তারাই র্যাবের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। এখন পুলিশ বাহিনীকেও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’
বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে, পুলিশের ওপর হামলা করবে, আর পুলিশ কি চেয়ে থাকবে? রাষ্ট্রের জনগণ ও জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় দেশের পুলিশ বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালন করবে, এটাই স্বাভাবিক।’
বিএনপি হত্যা, ষড়যন্ত্র আর সন্ত্রাসের রাজনীতির প্রতিফল ভোগ করছে বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বলেন, ‘দলটি এখনও অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেনি। তাই তারা এখনও তাদের অতীতের ভুলের মাশুল দিচ্ছে। এখনও যদি বিএনপি গণতন্ত্রের পথে ফিরে না আসে তাহলে ব্যালটের মাধ্যমে জনগণ উপযুক্ত জবাব দেবে।’
সরকারের পদত্যাগ দাবি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে ফখরুলের বক্তব্য মামার বাড়ি আবদার উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘সরকার কেন পদত্যাগ করবে? আওয়ামী লীগ জনরায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, জনগণ আওয়ামী লীগকে পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। কাজেই মেয়াদ শেষে যথাসময়ে সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে।’
নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই- এ বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন আওয়ামী লীগ নেতা।