পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পাশাপাশি সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুস্পষ্ট লঘুচাপটা এখন ভারতের উড়িষ্যা প্রদেশে স্থলে নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে ভারতের আরও ভেতরের দিকে প্রবেশ করে ক্রমান্বয়ে আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে।’
এ রকম অবস্থা কতদিন থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটা স্থলনিম্নচাপ আছে, সেখান থেকে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে যে মুনসুন অ্যাক্টিভ আগামী পরশু দিন এটা মার্চ করতে পারে।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দরসমূহে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যেহেতু এখন পূর্ণিমার সময়, এ ছাড়া বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস এই দুটির প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আজকে ও আগামীকাল এই জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।’
এদিকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে উড়িষ্যা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে।
এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি হ্রাস পেতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।