বিএনপির নেতাকর্মীদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ রাখার তাগিদ দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, কখনই উচ্ছৃঙ্খল না হওয়াটা তাদের দায়িত্ব।
বৃহস্পতিবার দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত শাওন প্রধানের স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়ে পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি নেতা এই কথা বলেন।
এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ রাখার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন ফখরুল।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় মিছিলে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ যখন দলটিকে আক্রমণ করছে, তখন তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, কখনই উচ্ছৃঙ্খল হবেন না৷ শান্তিপূর্ণভাবে শৃঙ্খলার সঙ্গে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা আন্দোলন করব।’
জুলাই থেকে বিএনপি নানা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সক্রিয় হয়ে ওঠার পর দেশের নানা প্রান্তে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হচ্ছে।
এর মধ্যে ভোলায় জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার প্রাণহানির পর নারায়ণগঞ্জেও প্রাণ গেছে এক তরুণের, যাকে যুবদল কর্মী বলছে বিএনপি।
নারায়ণগঞ্জে শাওন যেদিন আঘাতে নিহত হন, সেদিন মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ নানা জেলায় সহিংসতা হয়েছে। এর আগে কয়েক দিনে মারামারি হয়েছে কুমিল্লা, নেত্রকোণা, ফেনী, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জসহ নানা জেলায়।
এসব ঘটনার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আক্রমণ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা করছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালেও একই কাজ করেছিল দলটি।
তবে বিএনপি নানা সময় অভিযোগ করছে, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিনা উসকানিতে তাদের ওপর হামলা করছে। দেশের ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে প্রাণহানির ঘটনায় রক্তের প্রতিশোধ দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। বলেছেন, এই সরকারের পতন ঘটিয়েই নেয়া হবে সেই প্রতিশোধ।
নারায়ণগঞ্জে নিহত শাওনের বাড়িতে গিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা কখনই হয়রানিতে বিশ্বাস করি না, সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না।’
শাওন যুবদল করতেন না বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য এসেছে সেটিও নাকচ করেন ফখরুল। বলেন, তিনি যুবদলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। আর তিনি যুবলীগ করলেও তাকে গুলি করে হত্যার অধিকার কারও নেই।
শাওনকে পয়েন্ট ব্ল্যাংক থেকে গুলি করার অভিযোগ এনে এই ঘটনায় দায়ীদের বিচারও দাবি করেন বিএনপি নেতা। সেই সঙ্গে পুলিশকে সরকারের ‘অন্যায় আদেশ’ না শোনার আহ্বান জানান।
রাতে পুলিশ পাহারায় শাওনকে সমাহিত করার নিন্দা জানিয়ে একদিন এই ঘটনার বিচারের অঙ্গীকারও করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘এ ফ্যাসিবাদি সরকার হত্যা, গুম করে দমিয়ে রাখতে চায়। জিনিসপত্রের দাম যখন বাড়ছে, তখন তার প্রতিবাদ করতে গেলে তারা হত্যা করছে। তারা মানুষকে অত্যাচার করছে, নির্যাতন করছে।’