বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবির হলে ‘ম্যানার’ ভাঙায় ৩ শিক্ষার্থীকে পিটুনি

  •    
  • ৩১ আগস্ট, ২০২২ ২২:৩১

প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গতকাল বাংলাদেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের খেলা ছিল। গেস্টরুমে উপস্থিত ছাত্রলীগের বড় ভাইদের সামনে শাহরিয়ার সোহাগ খেলার স্কোর দেখার জন্য ফোনের স্ক্রিন অন করেছিলেন। এটা ছাত্রলীগের বেঁধে দেয়া নিয়মের পরিপন্থী হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়।’

‘গেস্টরুমে’ যেতে দেরি করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে প্রথম বর্ষের তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের সবাই হল ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেনের অনুসারী।

মঙ্গলবার রাতে হলটির ১০২৭ নম্বর রুমে মারধরের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, এই রুমটি ছাত্রলীগের সিনিয়র কর্মীরা জুনিয়র শিক্ষার্থীদের ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে মানসিক নির্যাতনের জন্য ব্যবহার করে। এসব ‘ম্যানার’ ভঙ্গ করলে শিক্ষার্থীদের করা হয় নির্যাতনও।

মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম পাপ্পু, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী মো. মারুফ আহমেদ ও আইন বিভাগের নাহিয়ান নাবিল। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে মারধরের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ ও ফিরোজ আহমেদ এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের নাঈম।

মারধরের শিকার এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘হলে অনেক কিছু হচ্ছে। কিন্তু কয়েকটা নিউজে কি সব অফ হয়ে যাবে? সবাই মিলে যদি মানববন্ধন করা হয় তাহলেও এই নির্যাতন বন্ধ হবে না। তাদের কিছুই হবে না। আমাদেরই নীরবে সব সয়ে যেতে হবে। কারণ আমাদের হলে থাকতে হবে।’

প্রশাসন বরাবর কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে এই ভুক্তভোগী বলেন, ‘অভিযোগ দিয়ে কী হবে। হল তো চালায় ছাত্রলীগ। প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ। ওদের অভিযোগ দিলেও যা, না দিলেও তা। তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না।’

ঘটনার সময় সেই রুমে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী মারধরের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল বাংলাদেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের খেলা ছিল। গেস্টরুমে উপস্থিত ছাত্রলীগের বড় ভাইদের সামনে শাহরিয়ার সোহাগ খেলার স্কোর দেখার জন্য ফোনের স্ক্রিন অন করেছিলেন। তার এই আচরণ ছাত্রলীগের শেখানো নিয়মের পরিপন্থী হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়।’

এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘অন্যদিকে রাত ১০টার মধ্যে সবাইকে গেস্টরুমে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা ছিল বড় ভাইদের। কিন্তু নাঈম টিভি রুমে খেলা দেখতে যাওয়ায় সেই সময়ের মধ্যে গেস্টরুমে উপস্থিত হতে পারেননি। পরে তাকে ডেকে এনে থাপ্পড় দেন মারুফ। এ সময় আশরাফুল জুতা এবং পাশে থাকা বোতল ছুড়ে মারেন। এ ছাড়া অন্য একটা অভিযোগে ফিরোজের গলাও টিপে ধরেন তারা।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীকে ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি। তবে গণমাধ্যমের কাছে দুই অভিযুক্ত আশরাফুল ও মারুফ মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

আশরাফুল বলেন, ‘এ রকম কিছু ঘটেনি।’

আরেক অভিযুক্ত নাবিল বলেন, ‘সামনে হলের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে। তাই আমার নামে শত্রুতা করে অনেকেই অভিযোগ দিতে পারে। ওই রকম কোনো কিছুর সঙ্গে আমি জড়িত না।’

এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এ রকম কিছুর সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকেই আমি ঘটনাটি এখন শুনছি। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেয়া হবে৷’

এ বিভাগের আরো খবর