বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের জন্য সরকার জেলায় জেলায় আয়নাঘর তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদী কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সব নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় দল।
সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার মহাসচিব এস এম শাহাদাত, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
এ সময় কৃষক দলের এম জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রদলের সাবেক নেতা জহির উদ্দিন তুহিন, কাজী নোকিয়ার হোসেনসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘কদিন আগে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বিএনপির মিছিলে পুলিশ আর বাধা দেবে না। কিন্তু আমরা তার উল্টোটা দেখলাম। ওই বক্তব্যের পর পরই হামলার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। শ্রীনগর, ফেনী, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী রক্তাক্ত হচ্ছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে এসব করছে। এই হলো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার শাসন। কেউ যদি তার কথা বিশ্বাস করেন, তবে তারা বিভ্রান্তির মধ্যে বাস করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘হবিগঞ্জে ছাত্রদলের নেতা হাফিজুল ইসলাম হাফিজকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু স্বীকার করছে না। আসলে রাষ্ট্রক্ষমতায় গায়েবি প্রধানমন্ত্রী শাসন করছেন। কারণ তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি গায়েবি ভোটের প্রধানমন্ত্রী। আমি অবিলম্বে ছাত্রদলের নেতা হাফিজের সন্ধান দেয়া ও পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে খালেদা জিয়াকে চ্যালেঞ্জ মনে করেন বলেই সরকার তাকে বন্দি রেখেছেন। কারণ তিনি হলেন দেশের গণতন্ত্র রক্ষার, বাকস্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের প্রতীক। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকলে দেশে শান্তি থাকবে না।
‘সরকার নির্বাচন কমিশন ও ভোটকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে। গণতন্ত্রকে লাইফ সাপোর্টে পাঠিয়েছে। এখন সরকার নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। তবে ভুল করছেন। ১৮ কোটি মানুষের দেশে এই স্বপ্ন আর পূরণ হবে না।
‘প্রধানমন্ত্রী তার চেতনা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাজিয়ে সারা দেশে জেলায় জেলায় আয়নাঘর বানিয়েছে। যেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরে নিজেদের মনমতো স্বীকারোক্তি আদায় করছে। আজকে হাফিজুরকে কোন আইনে আটক রাখা হয়েছে তার জবাব দিতে হবে। কিন্তু জনতার উত্তাল স্রোতে সেই আয়নাঘর তুলার মতো উড়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে গরিবের চালের দাম ৬০ টাকা কেজি। সবকিছুর ওপর ডাকাতের মতো নিয়ন্ত্রণ তৈরি করেছে।
যতই আয়নাঘর বানান জনগণ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। আপনি কোন রুটে পালাবেন সেই প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আপনাকে বিদায়ের দাবিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। আপনাকে যেতেই হবে।’