বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামলায় পলাতক, অফিসে ছুটিতে সুভায়ন

  •    
  • ২৫ আগস্ট, ২০২২ ১২:১৩

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক মো. সালেহ বলেন, ‘সুভায়ন খীসাকে বাসা ও অফিসে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।’

সুভায়ন খীসা খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা। গত ১৬ আগস্ট নিজ কার্যালয়ে একই উপজেলার মহালছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌসুমি ত্রিপুরাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টায় অভিযুক্ত মামলার আসামি তিনি।

মৌসুমি ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা করার পরদিন অর্থাৎ ১৭ আগস্ট থেকে তিন দফায় ছুটির আবেদন করেন সুভায়ন খীসা এবং তা মঞ্জুর করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

ছুটি মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নৈমিত্তিক ছুটিতে দুইবার এবং চিকিৎসার জন্য ২৪ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনের ছুটিতে রয়েছেন সুভায়ন খীসা। ঘটনার পর থেকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে চাওয়া ছুটি মঞ্জুর হওয়ায় সুভায়ন খীসা দাপ্তরিকভাবে ছুটিতে থাকলেও পুলিশের নথিতে মামলার পর থেকে রয়েছেন পলাতক।’

মৌসুমি ত্রিপুরা বলেন, 'গত ১৬ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত আমি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। ঘটনার দিন রাতে সুভায়ন খীসাসহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের কয়েকজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে দেখতে যান এবং মীমাংসার প্রস্তাব দেন। মীমাংসায় অস্বীকৃতি জানানোর পর সুভায়ন খীসা হাসপাতালে আমাকে আবারও প্রাণনাশের হুমকি দেন।'

তিনি বলেন, ‘গত ২৩ আগস্ট আমাকে অনেকটা জোরপূর্বক এ ঘটনার জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করতে ডেকে পাঠান। আমি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করি এবং বক্তব্য উপস্থাপন করি।

'কিন্তু সুভায়ন খীসাকে কোনো প্রকার জিজ্ঞাসাবাদ বা সাক্ষাৎকার ছাড়া কয়েক দফায় ছুটি মঞ্জুর করেছেন। একজন নারী শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার পরও কীভাবে তাকে এত সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে, তা রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন। শুনতেছি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সুভায়ন খীসা উচ্চ আদালতে গিয়ে জামিনের চেষ্টা করছেন।’

ছুটি মঞ্জুরের ব্যাপারে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সুভায়ন খীসার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। ২৪ আগস্ট ই-মেইলে চিকিৎসার জন্য আরও ১৫ দিনের ছুটি চেয়ে আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেও আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি দেয়া হয়েছে।’

নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন কীভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কনিকা খীসার মাধ্যমে সুভায়ন খীসা ছুটির আবেদন পাঠিয়েছেন। সুভায়ন খীসার কাছ থেকে তিনি কীভাবে আবেদন করেছেন সেটি কনিকা খীসা ভালো বলতে পারেন।’

কনিকা খীসা জানান, সহকর্মী সুভায়ন খীসার স্ত্রী তার কাছ থেকে ছুটির আবেদন নিয়ে তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দিয়েছেন। এর বাইরে আর কিছু জানেন না তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক মো. সালেহ বলেন, ‘সুভায়ন খীসাকে বাসা ও অফিসে গিয়ে খুঁজেও পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।’

খাগড়াছড়ি সদরের মহালছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেট ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে গত ১৬ আগস্ট সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানাতে আবেদন নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক মৌসুমি ত্রিপুরা।

তার অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের গেট ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে জানাতে উপজেলা শিক্ষা অফিসে যান তিনি। এ সময় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুভায়ন খীসাকে আবেদনটি দিতে চাইলে উনি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অন্যজনকে দিতে বলেন।

কাজ শেষ করে ফেরার পথে আবেদনটি নিজে কেন নেননি জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমিকে মারধর শুরু করেন সুভায়ন খীসা। একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান অফিসে থাকা লোকজন।

হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে মৌসুমি ত্রিপুরা অভিযুক্ত সুভায়ন খীসাকে স্বামী দাবি করলেও মামলার এজাহারে তা উল্লেখ করেননি। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কোনো মন্তব্য করেননি মৌসুমি ত্রিপুরা।

অভিযোগ স্বীকার করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সুভায়ন খীসা ঘটনার দিন নিজ কার্যালয়ে বসে সাংবাদিকদের জানান, মৌসুমি ত্রিপুরা গায়ে হাত দেয়ায় তাকে সরাতে ধাক্কা দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর