নাটোরের বড়াইগ্রামে জীবন আহমেদ নামে ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে সিগারেটের ছ্যাঁকাসহ নির্যাতনের ঘটনা এক হাজার টাকায় মীমাংসার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে রফা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে মুদি দোকানি ইউনুস আলী শিশুটিকে এমন নির্যাতন করেন।
শিশুটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে রয়েছে।
জীবন হোসেন উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের বোর্নি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সুজন হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।
জীবন জানায়, শুক্রবার সকালে তার এক সহপাঠীকে সে লুকিয়ে ধূমপান করতে দেখে। ওই সহপাঠী তখন বিষয়টি কাউকে না জানাতে জীবনকে অনুরোধ করে। পরে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে দুপুরে তার বাবার মুদি দোকানে যেতে বলে। দুপুর ১টার দিকে জীবন সহপাঠীর বাবা ইউনুস আলীর মুদি দোকানে যায়। দোকানের ভেতরে নিয়ে ইউনুস আলী হঠাৎ তাকে চড় থাপ্পড় মারেন এবং জ্বলন্ত সিগারেট তার ডান হাতে চেপে ধরে ছ্যাঁকা দেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে এলাকার জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসক রাসেল হোসেন বলেন, ‘শিশুটির ডান হাতে পোড়া জখম পাওয়া গেছে। পোড়ার ধরণ দেখে সিগারেটের ছ্যাঁকা বলে মনে হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় জীবনের মা জহুরা বেগম ছেলেকে নিয়ে ইউনুস আলীর দোকানে গিয়ে নির্যাতনের কারণ জানতে চান। এ নিয়ে বাগবিতন্ডার পর জহুরা বেগম জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে জানান।
শনিবার সকালে চিকিৎসাবাবদ এক হাজার টাকা জরিমানা করে চেয়ারম্যান নির্যাতনের ঘটনার নিষ্পত্তি করেন।
জহুরা বেগম বলেন, তার স্বামী মালয়েশিয়া থাকেন। স্বামী বাড়িতে না থাকায় তিনি ছেলেকে নির্যাতনের বিষয় নিয়ে মামলা করতে চাননি।অভিযোগের বিষয়ে ইউনুছ আলী জানান, দোকানের পাশে তার ছেলের সঙ্গে জীবনের ধাক্কাধাক্কি হচ্ছিল। তিনি তাদের ছাড়াতে গেলে অসাবধানতা বশত তার হাতে থাকা সিগারেট জীবনের হাতে ঠেকে যায়। এতে তার হাত কিছুটা পুড়ে গেছে।
জীবনকে ইচ্ছা করে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেননি বা মারপিট করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শিশুটির মা আমার কাছে বাদি হওয়ায় দুই পক্ষকে ডেকে একটা সমাধান করে দিয়েছি।’ বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, ‘এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’