বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শাস্তি-জরিমানা কম হওয়ায় চট্টগ্রামে বাড়ছে ভেজাল খাদ্য তৈরি ও বিক্রি

  • আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম   
  • ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:০৫

চট্টগ্রামে অভিযানেও থামছে না ভেজাল খাদ্যদ্রব্য তৈরি ও বিক্রি। এমনকি মানুষের মরণব্যাধি রোগ প্রতিরোধকারী মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। মুনাফালোভী কিছু অসাধু চক্র ও খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসব ভেজাল খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করে বাজারজাত করছে। মানহীন এসব খাবার তৈরিতে তারা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ও সোডাসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করে, যা ওই খাদ্যের সাথে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে লিভার ও কিডনি নষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। এছাড়া ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও থাকছে। জরিমানার পরও এসব চক্রের সদস্যরা ফের যুক্ত হচ্ছে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকলকে এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযানের পরে শাস্তি পাওয়া ওই ব্যবসায়িকে ফলোআপে রাখতে হবে। এছাড়া এসব অপরাধের জন্য শাস্তির পরিমানও বাড়াতে হবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাবর) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের দৈনিক বাংলাকে বলেন, অতি মুনাফালাভের কারণে ব্যবসায়ীরা বারবার একই অপরাধ করে থাকেন। তাই অভিযানের পর জরিমানা বা শাস্তি পাওয়া প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়িকে ফলোআপে রাখতে হবে। এছাড়া ভোগ্যপণ্যেও পাইকারি ও খুচরা মার্কেটগুলোতে তদারকি বা অভিযান বাড়তে হবে।

তিনি বলেন, অভিযানে কোনো প্রতিষ্ঠানের অপরাধ নজরে আসার পর যে পরিমাণ শাস্তি বা জরিমানা হওয়ার কথা সে পরিমাণ হয় না। যা হয় তা অতি নগণ্য। তাই এসব অতি মুনাফালোভীদের আবারও একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তাই শাস্তি বা জরিমানার পরিমাণও বাড়াতে হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে নতুন নতুন কারখানা হলে সেগুলোর সঠিক তথ্য আমরা পাই না। যার কারণে তারা এ অবৈধ ব্যবসা করার সুযোগ নেয়।

জরিমানার পরও এসব চক্রের সদস্যরা ফের যুক্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা এই অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তারা সুযোগ নেন। তাই প্রশাসনের সকল স্তর থেকে এদেও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে সাধারাণ ভোক্তারা উপকৃত হবেন।

অন্যদিকে অনুমোদনহীন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করছে নগরের বড় বড় ফার্মেসিগুলো। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযানে জরিমানা করেও থামানো যাচ্ছে না এদের ভেজাল খাদ্য তৈরি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপচেষ্টা।

গত সোমবার নগরীর বহদ্দারহাট খাজা রোড, মাইজপাড়া এলাকায় সততা প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার নামে এক প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার অভিযান চালায়। অভিযানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি বিশুদ্ধ পানি উৎপাদনের আড়ালে নকল স্টারিং পাওয়ার অয়ের তৈরি করছে। ওই প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। একই অভিযানে ওই এলাকায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপরাধে জয়নাব মেডিকেল হল ও জননী মেডিসিন হলকে পাঁচ হাজার টাকা কওে জরিমানা করা হয়। এছাড়া আল হাসান নামে এক বেকারি প্রতিষ্ঠানে মেয়াদবিহীন মিষ্টান্ন বিক্রির অপরাধে জরিমানা করা হয়।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট নগরীর বায়েজিদ থানার চন্দ্রনগর এলাকায় সাদিয়াস কিচেনের কারখানায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন অভিযান চালায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সংরক্ষণ তৈরি, ফ্রিজে কাচা ও রান্নাকৃত খাদ্য একত্রে রাখা, লেবেলবিহীন খাদ্য সংরক্ষণ, রান্নাঘরের পাশে মুরগি পালন, খাদ্যকর্মীদের ইউনিফর্ম না থাকা ও বিভিন্ন লাইসেন্স সনদ দেখাতে না পারায় সাদিয়াস কিচেনকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গত ৯ জুলাই বুধবার নগরের কোতোয়ালি থানাধীন স্টেশন রোড এলাকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় গুলিস্তান হোটেল ও আজাদী হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায়। এ সময় তেলাপোকার উপদ্রব ও অস্বাস্থ্যকর রান্নাঘরের পরিবেশ, খাদ্যেপচা ডিম ব্যবহার করার দায়ে এ দুই প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিনে ওই এলাকার দুই ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে জরিমানা করা হয়। তবে ভোক্তার অভিযোগ, অভিযান চালালেও থামাতে পারছে না এসব চক্রকে।

এ বিভাগের আরো খবর