বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জন্ম নেয়া সদ্যজাত এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহে। এ ঘটনায় শিশুটির মা ও নানিসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রসবব্যথা নিয়ে ভর্তি হন অভিযুক্ত মা। সন্ধ্যায় হাসপাতালের গাইনি বিভাগে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোগীর একাধিক স্বজন জানান, রাত ১০টার দিকে শিশুটিকে কক্ষের বাইরে নিয়ে যান তার নানি। পরে তিনি শিশুটির হাত-পা ভেঙে, অণ্ডকোষ ও গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করেন।
বিষয়টি রোগীর এক স্বজন বুঝতে পেরে শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় ওই শিশু।
জিহাদ নামে রোগীর এক স্বজন জানান, তিন বছর আগে এক যুবকের সঙ্গে শিশুটির মায়ের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দুই বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে।
বিচ্ছেদের পর থেকেই শিশুটির মা তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। গত ১ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলার আরেক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের এক সপ্তাহের মধ্যেই জন্ম নেয়া ওই শিশুটি বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের ফল হিসেবেই ধারণা করা হচ্ছে। আর নতুন সংসারে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তারেক মাহমুদ নামে রোগীর আরেক স্বজন বলেন, ‘একটি নিষ্পাপ শিশুকে এভাবে নির্যাতন করে হত্যা খুবই ন্যক্কারজনক। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে শিশুটির নানি বলেন, ‘আমি কিছু জানি না। আমি বাবুটাকে বাইরে নিয়ে গেছিলাম। তারপর দেখি সে নড়াচড়া করছে না।’
এ বিষয়ে শিশুটির মা বলেন, ‘আমি তো আমার বেডে ছিলাম। আমার মা ছেলেকে বাইরে নিয়ে যায়। আমি কিছু জানি না।’
ঝিনাইদহ সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হরিদাস পাল বলেন, ‘সবার সঙ্গে কথা বলে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, পরকীয়ার কারণে সন্তান হওয়ায় তা মেনে নিতে পারেনি। যেহেতু তার নতুন বিয়ে হয়েছে, সে কারণে শিশুটির নানি এই কাজ করতে পারে। আমরা ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটিকে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’