রাজধানীতে আবার সন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। এবারও জানা গেছে, সেই নারী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি হত্যার অভিযোগ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগর এলাকার বালুর মাঠসংলগ্ন একটি বাসায়। সেখানে গলাটিপে হত্যা করা হয় ১০ মাস বয়সী শিশুকন্যা তানজিলা আক্তারকে।
গত ১২ আগস্ট শিশুটিকে হত্যার পরদিন মরদেহ সমাহিত করা হয়। এর তিন দিন পর সেটি কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
শিশুটির বাবা কিতাব আলী শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান। শিশুটির মা তানিয়া আক্তারের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা রয়েছে।
সেই রাতের বর্ণনা দিয়ে কিতাব বলেন, রাতে কাজ শেষে বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে স্ত্রী তাকে ডেকে ওঠান। জিজ্ঞেস করেন, ‘তানজিলা কোথায়।’
পরে খোঁজাখুঁজি করে বাউন্ডারির ভেতর একটি বালতিতে পাওয়া যায় তাকে। পাত্রটিতে সামান্য পানি ছিল। এরপর শিশুটিকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন মুগদার কুমিল্লাপট্টি এলাকার একটি কবরস্থানে তানজিলাকে দাফন করা হয়। এরপর নরসিংদী থেকে শিশুটির খালা মার্জিয়া আক্তার ঢাকায় আসেন। কবরস্থানে দাফনের কথা শুনে তাদের ও এলাকার লোকজনদের মনে সন্দেহ হয়।
শিশুটি এভাবে মরতে পারে না, পরে শিশুটির বাবা ও খালারা মিলে মুগদা থানায় একটি মামলা করেন। এরপর শিশুটির মাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন তিনি গলাটিপে হত্যা করে বালতিতে ফেলে রাখার কথা স্বীকার করেন।
১৫ আগস্ট দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শিশুটির মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। এরপর সেটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়।
মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নগেন্দ্রকুমার দাস বলেন, ‘শিশুটির মা ও বাবা- দুজনের দিকেই সন্দেহ ছিল। পরে তার মা তানিয়া আক্তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৭ আগস্টও এক নারীর বিরুদ্ধে তার সন্তানকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া যায়। সে সময়ও জানা যায়, সেই নারীর মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছিল।
সেদিন ঝুমুর নামে পাঁচ বছর বয়সী শিশুটিকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। তার মা শম্পা আক্তার এই কাজ করেন বলে জানান স্বজনরা।
মানসিক রোগের চিকিৎসা করাতে ভাইয়ের বাসায় আনা এই নারী একা অবস্থায় থাকার সময় এ ঘটনা ঘটান।