২১ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না মো. আলমের। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার আটিপাড়া এলাকায় তার বাড়ি। স্ত্রী হত্যার অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত।
শনিবার রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে আলমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, যৌতুকের দাবিতে ২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ির অদূরে গৃহবধূ আম্বিয়াকে মারধরের একপর্যায়ে তার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী মো. আলম। এ সময় আম্বিয়ার আত্মচিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আম্বিয়া।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মকবুল হোসেন সিংগাইর থানায় আলমসহ পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর থেকেই পলাতক ছিলেন আলম।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। আর জড়িত না থাকায় বাকিদের চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৩ সালের ৩০ নভেম্বর মানিকগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসামির অনুপস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রায়ের পর আলমের আইনজীবী উচ্চ আদালতে আপিল করলে সেখানেও তার মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, মামলার সাজা থেকে বাঁচতে ঘটনার পর জাতীয় পরিচয় পরিবর্তন করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন আলম। এ অবস্থায় তিনি আরেকটি বিয়েও করেন এবং এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে তিনি রাজধানীর টিকাটুলীতে বাস করতেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর বংশালে একটি জুতার কারখানা থেকে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে সিংগাইর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।