চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন চা শ্রমিকরা।
তাদের দাবি, বাগান মালিকদের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী বেতন ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হোক।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানসহ সারা দেশের ২৪১ বাগানের শ্রমিকরা।
কর্মসূচিতে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা জানান, প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও দীর্ঘদিন ধরে দেশের চা শ্রমিকরা মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। অথচ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ নেতাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়।
চুক্তির ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করেনি মালিকপক্ষ। তাই শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। তিন দিনের মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে বাগানে অচলাবস্থা সৃষ্টি ও রাস্তায় নামার হুমকিও দেন চা শ্রমিক নেতারা।
এ সময় চান্দপুর বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বলেন, ‘চা শ্রমিকরা দেশের ভোটার হয়েও তারা অবহেলিত। মৌলিক অধিকারও তাদের ভাগ্যে জোটে না। এ ছাড়া রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে দিনে মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। এভাবে আমরা চলতে পারছি না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।’
বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেন, ‘দেশে সব জিনিসের দাম হু হু করে বাড়ছে। অথচ চা শ্রমিকরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে ১২০ টাকা মজুরি পায়। এই টাকা দিয়ে এখন এক লিটার তেলও মেলে না।
‘দুই কেজি সবজি কিনতেই এই টাকা চলে যায়। তাই শ্রমিকদের বাঁচানোর স্বার্থে মজুরি ৩০০ টাকা করতে হবে।’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, ‘মালিক-শ্রমিকের মধ্যে চুক্তির ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও তারা শ্রমিকদের বেতন বাড়ায়নি। মালিকরা দৈনিক জনপ্রতি ১৪ টাকা করে বাড়ানোর কথা জানিয়েছে, তাই আজকে এ কর্মসূচি পালন করছি।
‘আমরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছি। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে আমরা বাগান সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেব। প্রয়োজনে রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’