জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ছাত্রলীগ।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর সেখানে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান রিদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, তিতুমীর কলেজ ও বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বঙ্গমাতার জন্মদিনে এই মহীয়সী নারীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি, সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির আজীবন সুখ-দুঃখের সঙ্গী এই মহীয়সী নারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
‘বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে ধাপে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে নয়, সংসারের অন্তরালে থেকে আবির্ভূত হয়েছিলেন একজন দক্ষ নীরব সংগঠক রূপে।’
আল নাহিয়ান খান আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, নেতৃত্বের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে যখনই কোনো সংকটের কালো ছায়া ঘনীভূত হয়েছে, বঙ্গমাতা সেই কালো ছায়া দূর করার জন্য পর্দার অন্তরালে থেকে দলকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন, দলের নেতাদের সঠিক পরামর্শ দিয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের আকাশে নেপথ্যের নক্ষত্র হয়ে বঙ্গবন্ধুর পাশেই তিনি জ্বলবেন আপন মহিমায়।’
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন সংগ্রামের ধাপে ধাপে বঙ্গবন্ধুর নির্ভীক সহযাত্রী ছিলেন বঙ্গমাতা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছার মতো বুদ্ধিদীপ্ত, দূরদর্শী, সাহসী, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান ইতিবাচক ভূমিকাই শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হতে সহায়তা করেছে।
‘নীরবে-নিভৃতে তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্যে, বাংলাদেশের জন্যে, বাংলাদেশের মানুষের জন্যে শুধু দানই করে গেছেন। যিনি পরিবারের চেয়ে সব সময় দেশের প্রয়োজনকে, রাজনৈতিক প্রয়োজনকে বড় করে দেখতেন।’
লেখক আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জেলে থাকার সময়গুলোতে তিনি পর্দার অন্তরালে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, দলের নেতাদের সঠিক পরামর্শ দিয়েছেন। বাঙালি জাতি আজন্মকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে এই মহিয়সী নারীকে। মহীয়সী এই নারীর কথা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, যিনি পরিবারে পরিচিত ছিলেন রেণু নামে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন তিনি।
শুধু সহধর্মিনী হিসেবে নয়, রাজনৈতিক সহকর্মী হিসেবে আজীবন প্রিয়তম বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুর সপরিবার হত্যাযজ্ঞে তিনিও শহীদ হন।