বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাহালমের জেল খাটার দায় ব্র্যাক ব্যাংকের: হাইকোর্টের রায়

  •    
  • ৭ আগস্ট, ২০২২ ১২:২৭

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে ব্র্যাক ব্যাংককে বলা হয়েছে। টাকা পরিশোধ করে এক সপ্তাহ পর রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিনা দোষে পাটকল শ্রমিক জাহালমের জেল খাটার ঘটনায় বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংককে দায়ী করেছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট রায় প্রকাশ করেছে।

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে ব্র্যাক ব্যাংককে বলা হয়েছে।

টাকা পরিশোধ করে এক সপ্তাহ পর রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

রায় প্রকাশের বিষয়টি রোববার নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

৮৮ পৃষ্ঠার রায়ের জাহালমের ঘটনার জন্য দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা, সোনালী ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্রাংকের সমালোচনা করেছে উচ্চ আদালত।

তিন বছর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত। পরে আদালত এ ঘটনায় জাহালমকে দ্রুত মুক্তির নির্দেশ দেয়। এরপর ফের তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলে। এরপর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে। যার পূর্ণাঙ্গ রায় আজ প্রকাশ হয়েছে।

রায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা সম্পর্কে আদালত বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায়, বিশেষত ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা সালেকের স্থলে জাহালমকে এনেছে। তারা যেনতেন ভাবে একজন আবু সালেককে দুদকের সামনে হাজির করে তাকে (জাহালম) আবু সালেক হিসেবে শনাক্ত করেন। তারা তদন্ত কর্মকর্তাকে ভুলপথে পরিচালিত (মিসগাইড) করেছেন। তারা ইচ্ছা করে এ কাজ করেছেন।’

আর দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার উদ্দেশে রায়ে হাইকোর্ট বলে, ‘দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা যথাযথভাবে তার দায়িত্ব পালন করেননি। তদন্ত রিপোর্টেও এটা উঠে এসেছে। কিন্তু সব দেখে মনে হয়েছে তার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। এখানে দুদকের ৩১ ধারা (সরল বিশ্বাসের ভুল) প্রযোজ্য। যদিও তারা অদক্ষ ও অযোগ্য। কিন্তু আমরা ওই অফিসারদের প্রতি ক্ষতিপূরণ আরোপ করছি না। এখানে সালেকের স্থলে জাহালমকে জড়ানোর কোনো উদ্দেশ্য দেখছি না।’

রায়ে দুদককে সতর্ক করে হাইকোর্ট বলে, ‘দুদক একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠিত স্বাধীন কর্তৃপক্ষ। আইন ও বিধি অনুসারে তাদের তদন্ত কার্যক্রম চালাবে এবং ভবিষ্যতে কোনো মামলায় কোনো ব্যক্তিকে এ ধরনের ভুলভাবে যেন না জড়ানো হয় সে ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে।

রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘জাহালম নিয়ে হাইকোর্টের রায় প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে বিশদ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আদালত। সেখানে দুদককে উদ্দেশ করে শক্ত ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে। আমি মনে করি, এ রায় দুদকের জন্য একটা পথ নির্দেশনা ও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। ভবিষ্যতের কাজের ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তারা আরও সতর্ক থাকবেন। আর ব্র্যাক ব্যাংককে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তাকে ভুল পথে পরিচালিত করার জন্য।’

জাহালম যেভাবে মুক্তি পান

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন আইনজীবী বর্তমান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারের অমিত দাশগুপ্ত।

তখন বিষয়টি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করে হাইকোর্ট। পাশাপাশি জাহালমকে কেন মুক্তির নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত।

ওই রুলের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেয় এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চায়। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করে।

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেয়।

এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট ২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চায়। পরবর্তীতে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়।

২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই রুলের ওপর শুনানি হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে ব্র্যাক ব্যাংককে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ব্রাক ব্যাংক।

এ বিভাগের আরো খবর