সহপাঠীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।এই শিক্ষার্থীর নাম কবির আহমেদ কৌশিক। তিনি যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারে পড়েন।
বৃহস্পতিবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামালসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টররা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এক ছাত্রী কৌশিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন প্রক্টরের কাছে।
তিনি জানান, কৌশিক গত ২৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় ফোন করে সেমিনার লাইব্রেরিতে পড়াশোনাসংক্রান্ত আলোচনার জন্য দেখা করতে বলেন। বেলা আড়াইটা থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের অষ্টম তলায় বিভাগীয় সেমিনারে অপেক্ষা করেন তিনি।কৌশিক সোয়া ৩টায় সেমিনারে এসে অতর্কিতভাবে তাকে জড়িয়ে ধরেন বলে অভিযোগ করেন নেই ছাত্রী। তখন সেমিনারে কেউ ছিলেন না বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।
সেই ছাত্রী বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন এবং রেগে যান। কৌশিক তখন ব্যাপারটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন এবং পড়াশোনা সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করেন।নিজেকে সামলে নিয়ে সেমিনার থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় কৌশিক তার পথ আগলে ধরে আটকানোর চেষ্টা করেন বলেও উল্লেখ করেন সেই ছাত্রী। জানান, এ সময় আবার অশালীনভাবে তার কোমর, বুক ও পেটে হাত দেন।সেই ছাত্রী বলেন, তখন কী করবেন বুঝতে না পেরে কৌশিককে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে সেমিনার থেকে বের হয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় কৌশিক পেছন থেকে এসে আবার তার পথরোধ করেন এবং সপ্তম তলার সিঁড়িতে তাকে যৌন নির্যাতন করেন।অভিযোগে বলা হয়, ‘আমি তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য যতই অনুনয় বিনয়, ততই সে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে আমার শরীরে রীতিমতো স্পর্শ করতে থাকে। সে সময় আমার মনে হয়েছে সে আমাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করছে।‘ধ্বস্তাধস্তির একপর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা দিলে সিঁড়িতে পড়ে যাই। আমি কোনোভাবে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ঢুকে পড়ি এবং সে আমার পিছু নেয় লাইব্রেরি পর্যন্ত। লাইব্রেরিতে উপস্থিত আমার সিনিয়র আপুদের কাছে বিষয়টা জানালে তারা আমাকে বাসায় নিয়ে আসে।’
সেই ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে তার বাসায় এসেও তাকে হেনস্তার চেষ্টা করেন কৌশিক।
এ বিষয়ে জানতে কৌশিকের মোবাইলে কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে নক দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।