আওয়ামী লীগ ও বিএনপি- দুই দলই দেশের জন্য কিছু করে না বলে মনে করেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। তিনি মনে করেন, দুই দলের চরিত্রই এক। এ কারণে তৃতীয় কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় নিতে হবে।
অবশ্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এক চরিত্রের মনে করলেও বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার আগ্রহের কথাও বলেন ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর সাবেক ভিপি। এও বলেছেন যে, এই সরকারের পতন ঘটিয়ে বিএনপির হাতে ক্ষমতা দেয়া যাবে না।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনার বিষয় ছিল ‘ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক প্রস্তাব।’
নুর বলেন, ‘আমরা গত ৩৪ বছরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলকেই ক্ষমতায় দেখেছি। আমরা দুই দলেরই চরিত্র দেখেছি। তাদের চরিত্র একই। এই দুই দল ক্ষমতায় থাকলে জনগণের কিছুই হবে না। এ জন্য তৃতীয় কোনো শক্তিকে আমাদের ক্ষমতায় নিতে হবে।’
বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে আমাদের ঐক্য গড়তে হবে। এই ঐক্যে একটা নির্যাতিত দল হিসেবে বিএনপিকে সঙ্গে রাখতে পারি। কিন্তু তাদের হাতে ক্ষমতা ছাড়া যাবে না।’
আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় আছে বলে মনে করেন নুর। বলেন, ১৯৯৬ সালে বিএনপিও তাই করেছিল। তবে পরে তারা জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন তা করছে না।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে নুর বলেন, ‘আমরা চাই না আপনাদের পালানোর রাস্তা না থাকুক। আমরা চাই ভালো করেই নিরাপদে ক্ষমতা ছাড়ুন।
‘আপনারা এখনই সিদ্ধান্ত নিন। সময় আছে। যদি সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেন, তবে আপনারা খেসারত দেবেন, যে খেসারত জনগণ গত ১৩ বছর ধরে দিচ্ছে। আপনারা এই যে ঋণগুলো নিচ্ছেন, এগুলো পরিশোধ কে করবে?’
গণঅধিকার পরিষদের নেতা বলেন, ‘বিএনপিও '৯৬ সালে এককভাবে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা জনগণের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। তাদের খারাপ মতলব ছিল, তা বলা যায় না। তারা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমান সরকার যিনি ক্ষমতায় আছেন, যিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, যাকে মানুষ সম্মান দেয়। কিন্তু তিনি যেভাবে জনগণ ও বিরোধী দলের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছে, এতে আমরা লজ্জিত।’
ভোলায় সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী নিহতের ঘটনায় সরকারকে দায়ী করেন নুর। বলেন, ‘বিএনপির ভুল আছে মানলাম, তাই বলে তাদের গুলি করে হত্যা করতে হবে- এটা তো সমর্থন করা যাবে না।
‘যদি দেশে সংবিধান থাকত, তাহলে ভোলায় একটি দলের নিরস্ত্র নেতা-কর্মীদের সমাবেশে এভাবে গুলি করে হত্যা করতে পারে না।
‘মুস্তাককে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছে, পিন্টুকে হত্যা করা হয়েছে। আগস্টের পোস্টারে সারা দেশ ছেয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। তারা বলছে কাঁদো বাঙালি কাঁদো। আমরা তাতে সমবেদনা জানাই। কিন্তু এই আগস্ট মাসের শুরুতেই যে তারা নিজেরাই অন্য একটা দলের কর্মীকে হত্যা করলেন!’