এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপির বার্ষিক আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের বছরের তুলনায় এই ঘাটতি দ্বিগুণ হয়েছে।
২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় বিএনপির আয় কমেছে ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ৮১৯ টাকা। অন্যদিকে ব্যয় বেড়েছে ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬৭১ টাকা।
বিএনপির ২০২১ ও ২০২০ সালের আয় ব্যয়ের হিসেব বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ঘাটতি ব্যাংকে জমানো টাকা থেকে খরচ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের ২০২১ সালের আয়ের ব্যয়ের হিসাব জমা দেন।
রিজভী জানান, নির্বাহী কমিটি মাসিক চাঁদা, সদস্য ফরম ও মনোনয়নপত্র বিক্রি, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান এবং ব্যাংকের এফডিআর থেকে আয় ৮৪ লাখ ১২ হাজার ৪৪৪ টাকা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের ২০২১ সালের আয়ের ব্যয়ের হিসাব জমা দেন। ছবি: নিউজবাংলা
অন্যদিকে কর্মচারীদের বেতন বোনাস, অফিসের বিল, পোস্টার ও লিফলেট ছাপানো, ক্রোড়পত্র বিল, বিভিন্ন নেতাকে আর্থিক সাহায্য এবং অফিসের বিভিন্ন খরচ বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার ১৭১ টাকা।
এ বছরে দলটির ঘাটতি হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭২৭ টাকা।
২০২০ সালে বিএনপির আয় ছিল এক কোটি ২২ লাখ ৫৪ হাজার ২৫৯ টাকা। ব্যয় ছিল এক কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। ঘাটতি ছিল ৫১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৪ টাকা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতার আলাপকালে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ বর্জনের প্রসঙ্গটিও উঠে আসে। আর বর্তমান কমিশনকে মেনে না নিলেও তাদের কাছে আয় ব্যয়ের হিসাব জমা নিয়েও কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন, নির্বাচনের সংলাপ এটা নিয়ে তো আর আলাপ নয়। হিসাব দিতে হয়, আইনে আছে তাই দিলাম।’
সংলাপ বর্জন নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘সংলাপ রাজনৈতিক বিষয়। মহাসচিব ইতিমধ্যে বলেছেন, আমরা এই নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থাশীল নই। কেননা এখন পর্যন্ত যে কথাবার্তা দেখছি, সেটা একেবারেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, এটা আমরা আশা করছি না। এটা তাদের আচরণের মধ্য দিয়ে দিয়ে প্রমাণ করছে।
‘আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের কথা হলো, যে সরকার আছে এই সরকার; সমস্ত রাজনৈতিক দল জানে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানে, অবৈধ সরকার। তার অধীন কোনো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আর এটা সরকার নিজেই প্রমাণ করছে।’
সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন রিজভী। বলেন, ‘সেই সরকারের অধীনে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, তখন নির্বাচনে যাব।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের প্রভিশন আছে, এর আগে সংশোধনের নজির আছে। আবার নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে সন্নিবেশ করতে হবে। ইসির আচরণ যদি এমন হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সটেনশন হিসেবে যদি ব্যবহার করেন এবং আগামী নির্বাচন যদি তার মতো ইচ্ছা অনুযায়ী করতে চান এবং কর্মকাণ্ডের মধ্য যদি সেই ইচ্ছার প্রতিফলন হয়, তার অধীনে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। নিশ্চয় আন্দোলন হবে।’