বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইসির সংলাপে কাদের সিদ্দিকীর প্রশ্নবাণ

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২২ ২০:১১

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেকে বলেন তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন করব না। নির্বাচনের সময় সরকার কে? আমি বলব, তফসিল ঘোষণা করার পর আবার সরকার কে? আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনই রাষ্ট্রপতি, কমিশনই প্রধানমন্ত্রী। আপনি সেই ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন কি পারবেন না, সেটা মেরুদণ্ডের ব্যাপার।’

চলমান রাজনৈতিক সংলাপে সময় নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিরপেক্ষতা হারিয়েছে বলে মনে করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীরউত্তম)।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।

সংলাপে ইসির বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করেন কাদের সিদ্দিকী। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে পুরস্কারের ঘোষণা, তলোয়ার-রাইফেল প্রসঙ্গ, কুমিল্লা সিটিতে একজন এমপিকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েও তা বাস্তবায়ন করতে না পারা- এমন নানা বিষয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন। ইভিএম যাচাই নিয়ে ইসির পাঠানো চিঠিরও সমালোচনা করেন তিনি।

চলমান সংলাপে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্য দুই ঘণ্টা করে সময় নির্ধারণ করা হলেও বাকি ৩৬টি দলের জন্য এক ঘণ্টা সময় রাখা হয়েছে। কাদের সিদ্দিকী এটাকে বৈষম্য উল্লেখ করে অভিযোগ করেন, এর মাধ্যমে কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।

অবশ্য বুধবারের সংলাপে ১ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট সময় পায়। এ ছাড়া সংলাপে প্রতিটি দল থেকে ১০ জনকে আমন্ত্রণ জানালেও কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৭ জনের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।

নির্বাচনে সব দলের অংশ নেয়া প্রসঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা বলব, এখানে বিএনপি কিছু না, আওয়ামী লীগও কিছু না। এখানে সবকিছু হচ্ছে জনগণ এবং দেশের ভোটার। তারা নির্বাচনে না গেলেও যদি ৬৫-৭০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে যায় এবং ভোট দেয়, তাহলে এর চেয়ে চমৎকার নির্বাচন কমিশন আর হতে পারে না। সে জন্য বাধাহীনভাবে ভোটারদের ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

‘আপনারা যথার্থই বলেছেন যে ভোটে মানুষের উৎসাহ কমে গেছে। সেটা আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। তারা যেন ভোট দেয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ভোটাররা উৎসাহ পাবে এমন ব্যবস্থাও করতে হবে।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেকে বলেন তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন করব না। নির্বাচনের সময় সরকার কে? আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন আমি বলব যে তফসিল ঘোষণা করার পর সরকার কে? যিনি প্রধানমন্ত্রী তিনি প্রধানমন্ত্রী, যিনি রাষ্ট্রপতি তিনি রাষ্ট্রপতি।

‘আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনই রাষ্ট্রপতি, নির্বাচন কমিশনই প্রধানমন্ত্রী। আপনি সেই ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন কি পারবেন না, সেটা মেরুদণ্ডের ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী তার গেটের বাইরে বের হবেন কি হবেন না, সেটাও ইসিকে জিজ্ঞেস করতে হবে।’

ইভিএম যাচাইয়ে ইসির আমন্ত্রণে সাড়া না দেয়া প্রসঙ্গে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আমাদের পরিচয়ও হয়নি, আলোচনাও হয়নি। আপনাদের বাড়িতে এলাম, কন্যা দেখলাম, গভীর আলোচনা হলো- এমনটা আমাদের কাছে ঠিক সুন্দর মনে হয়নি। তাই আমরা ওখানে (ইভিএম নিয়ে এর আগের সংলাপ) অংশ নিইনি।’

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিগত কমিশন পুরো দেশকে ডুবিয়েছে দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘তার আগেরজনও তাই করেছেন। তার আগেরজনও কম-বেশি তাই করেছেন। আমার দেখা মতে, আবু হেনার মতো শক্তিশালী মেরুদণ্ডসম্পন্ন নির্বাচন কমিশনার দ্বিতীয় কেউ হননি।’

ইভিএমে ভুল ধরিয়ে দিলে ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা নিয়ে বঙ্গবীর বলেন, ‘কমিশনের পদে থেকে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া ঠিক নয়।‘

সিইসি তখন বলেন, ‘ভুলে একজন নির্বাচন কমিশনার এমন বক্তব্য দিয়ে ফেলেছেন। আমার মুখ থেকে এমন শব্দ আমি উচ্চারণও করিনি। এটা বিভ্রান্তি।’

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে এমপি বাহার নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন সিইসি। কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে কেন নির্দেশনা মানাতে পারলেন না। আর ক্ষমতা না থাকলে তাকে সেই নির্দেশনা দিলেন কেন?’

সিইসি জবাবে বলেন, ‘তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নির্বাচনি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে না বলে এলাকা ছাড়তে বলা হয়েছিল। তার ব্যাখ্যাটা সে সময় দিয়েছি।’

নীতির সঙ্গে কখনো বিরোধ হলে সিইসিকে পদত্যাগ করার পরামর্শও দেন কাদের সিদ্দিকী। বলেন, ‘এতে আপনি মাথার মণি হয়ে থাকবেন। এ ছাড়া দলগুলোর জন্য যত দরজা খোলা রাখবেন তত মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন। পানি ছাড়া যেমন মাছ বাঁচে না, তেমনি রাজনৈতিক দল ছাড়া ইসির অস্তিত্ব নেই। কোনো ভুলের জন্য ছাগলের খুঁট্টি ধরে থাকবেন না। ভুল বুঝতে পারলে স্বীকার করবেন, দেখবেন আপনার মর্যাদা বাড়ছে, ক্ষমতাও বাড়ছে। আল্লাহও খুশি হবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর