চট্টগ্রাম বন্দরে তৃতীয় দফায় জব্দ দুই কনটেইনার মদে সাড়ে ২০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিরীক্ষা, অনুসন্ধান ও গবেষণা (এআইআর) বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মো. সাইফুল হক নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘রপ্তানিকারক, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরন ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে দুটি কনটেইনার সন্দেহজনক হওয়ায় সেগুলো জব্দ করে এআইআর ও পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) টিম। সোমবার কনটেইনার দুটি পরীক্ষা করে বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের ২ হাজার ৮৫৮ কার্টন মদ পাওয়া যায়। এসব কার্টনে মোট ৩১ হাজার ৪৯২ দশমিক ৫ লিটার মদ রয়েছে, যার শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা প্রায়।
‘তাছাড়া দ্বিতীয় কনটেইনারে মদ ছাড়াও ৫৩টি বস্তায় ৫৩ হাজার আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেট পাওয়া গেছে। উচ্চ শুল্কের এসব পণ্যে মোট ২০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে।’
সোমবার বন্দরের ৫ নম্বর ইয়ার্ডে কনটেইনার দুটি জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিরীক্ষা, অনুসন্ধান ও গবেষণা (এআইআর) ও পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) টিম।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে এআইআর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মো. সাইফুল হক বলেন, ‘সন্দেহ হওয়ায় নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের নামে আনা একটি কনটেইনার সিলগালা করে এআইআর টিম। একই সময়ে একই কারণে আরেকটি কনটেইনারের বিষয়ে সন্দেহ হয় পিসিইউ টিমের। তাই তারা বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে নিয়ে আসা কনটেইনারটি সিলগালা করে।
‘দুটি কনটেইনারই চায়না থেকে পলি প্রোফাইলিন রেজিন ঘোষণায় নিয়ে আসা হয়েছে। কনটেইনারগুলোর বিল অফ এন্ট্রি দাখিল না হওয়ায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের নাম জানা যায়নি।’
এর আগে শুক্রবার আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে সুতা ও ববিন ঘোষণা দিয়ে এ বন্দরের মাধ্যমে আনা দুই কনটেইনার মদ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে জব্দ করা হয়।
র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে এসব মদ জব্দ করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা।
এরপর রোববার দুপুরে বন্দরে জব্দ করা হয় মদের আরও একটি কনটেইনার। বন্দরের ৫ নম্বর ইয়ার্ডে রোববার দুপুরে এই মদ জব্দ করে এআইআর টিম।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মো. সাইফুল হকের তথ্য অনুযায়ী, এই তিন কনটেইনারে ২ হাজার ৭৬০ কার্টনে বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের ৪৬ হাজার ৮২৯ দশমিক ৫ লিটার মদ পাওয়া গেছে। যার শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা প্রায়। মিথ্যা ঘোষণায় এসব উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানির মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে ৩৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা।