বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রেলের সঙ্গে বৈঠকের পর রনির কর্মসূচি স্থগিত

  •    
  • ২৫ জুলাই, ২০২২ ২৩:১৪

মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘সচিব মহোদয় ও ডিজি মহোদয়ের সম্মতিক্রমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অংশীজন সভায় আমাকে একজন প্রতিনিধিসহ উপস্থিত হয়ে যাবতীয় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা উত্থাপন ও আমার ৬ দফার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ফলোআপে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।’

রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে টানা ৪ ঘণ্টার বৈঠকের পর নিজের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে টানা কর্মসূচি পালন করে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। রাজধানীর রেল ভবনে সোমবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

তার আগে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের গিয়ে স্মারকলিপি দেন রনি।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রেল ভবনে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রনি৷ সভা শেষ হয় রাত সাড়ে ৯টার দিকে। এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে রেল সচিব হুমায়ুন কবির জানান, রনিকে রেলের অংশীজন সভার প্রতিনিধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘রনির সঙ্গে তার ৬ দফার প্রতিটি দফা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আন্তরিক।’

পরে মহিউদ্দিন রনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সচিব মহোদয় ও ডিজি মহোদয়ের সম্মতিক্রমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অংশীজন সভায় আমাকে একজন প্রতিনিধিসহ উপস্থিত হয়ে যাবতীয় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা উত্থাপন ও আমার ৬ দফার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ফলোআপে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

‘আমার ৬ দফা দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ডিজি মহোদয়ের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও আমার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তৃতীয় কোন পক্ষ যাতে কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, তাই আপাতত আমি আমার আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করছি।’

আরও পড়ুন: ট্রেনের টিকিটে অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান সহজের

তিনি বলেন, ‘তবে অংশীজন সভায় অংশ নেয়ার পর যদি দেখি আমার দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না, অথবা সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে আমি পুনরায় আমার আন্দোলনে ফিরে যাব। আশা করব, আমার এ আন্দোলনে বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী দেশপ্রেমিক এবং সৎ সকল নাগরিককে আমি আমার পাশে পাব।’

রেল ভবনে রনির সঙ্গে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে টানা ৪ ঘণ্টা বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৯টায় রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘রনির আবেগের জায়গাকে আমরা সম্মান করি। তিনি যে দাবিগুলো করেছেন, সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘রনি যে টিকিট হয়রানি নিয়ে বলেছে, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ বিষয়টিকে আরও কীভাবে জনবান্ধব করা যায়, সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

সচিব বলেন, ‘রেলের টিকিট ইন্টিগ্রেশন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। টিকিটব্যবস্থা জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে ইন্টিগ্রেটেড হয়ে যাবে। ফলে যে সমস্যাগুলো কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো আর থাকবে না। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফিকেশন ও চেকিং হয়ে যাবে। এ ছাড়া ই টিকিটিংয়ের ক্ষেত্রে পেমেন্ট নিয়ে আমরা সহজ ডটকমকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা ডিজিটাল টিকিটিং সিস্টেমের জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করে যাব।’

রেল সচিব বলেন, ‘আমাদের একটি কমিটি আছে। আমরা তিন মাস পর পর সভায় বসি। যেখানে মূলত যাত্রীদের কীভাবে সুবিধা বাড়ানো যায়, কীভাবে কাজ করা যায় এগুলো নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি রনিকে আমরা সেই অংশীজন সভায় অন্তর্ভুক্ত করব। ফলে তিনি নিয়মিত সেই মিটিংয়ে আসতে পারবেন। তার এই যে দাবিগুলো রয়েছে, সেগুলোর নিয়ে তিনি সেখানে আলোচনা করতে পারবেন এবং মনিটরিং করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রনি রেলের কালোবাজারি বন্ধের ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। আমরা বলেছি যে, রেলের কালোবাজারি বন্ধের ব্যবস্থা কিন্তু আছে। ব্লক চেকিংয়ের মাধ্যমে রেলের কালোবাজারি বন্ধে ব্যবস্থা আছে।

‘আমরা রনিকে অনলাইনে টিকিট যে ব্লক করা যায় না এটা বুঝিয়ে বলেছি। এরপরও আমরা এক্সপার্ট দিয়ে যাচাই করে দেখব এরকম কিছু আছে কিনা।’

হুমায়ুন কবির বলেন, ‘রেল দিয়ে আমাদের মহৎ পরিকল্পনা আছে। এখন প্রতিবছর রেলের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। যা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে রেলের সেবা বাড়বে বলে এ সময় আশা প্রকাশ করেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘রেলের টিকিট নিরীক্ষকদের বিষয়ে রনি যে দাবি করেছে, সেই দাবিগুলো আমরা আমলে নিচ্ছি। যেহেতু উনি আমাদের অংশীজন সভার প্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছেন, তিনি ভবিষ্যতে বিষয়টি দেখতে পাবেন। আমরা আইসিটি ডিভিশনের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। একটি স্মার্ট রেলে কীভাবে রূপান্তরিত করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি।’

রেলের প্রস্তাব অনুসারে অংশীজন সভায় অংশগ্রহণ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দিন রনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে রেলপথ মন্ত্রণালয় আশ্বস্ত করেছে তারা আমার দাবির ব্যাপারে সচেতন। উনারা যে আমাকে অংশীজন কমিটির সদস্য বানাতে চাচ্ছেন, আমি সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, এটা কিন্তু কোন টাকা পয়সার বিনিময় না। কোনো ব্যক্তিসুবিধা দেয়া হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমার কিছু দাবি আছে যেগুলো কয়েক মাসের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব হলেও কিছু দাবি আছে, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাসহ একটি লম্বা প্রসেসে যেতে হবে।

রনি বলেন, ‘আমি রেলের অংশীজন সভায় অংশগ্রহণ করব। বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তের, যারা ভুক্তভোগী আছেন তারা আমাকে জানাবেন। ভুক্তভোগীদের কথাগুলো এখানে বলার আমার একটা সুযোগ হয়েছে।’

তবে তার আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি বলে জানান রনি। বলেন, ‘আমার কর্মসূচি স্থগিত করেছি। কারণ আমার কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে। আমার যে ছয় দফা, এখন শুধু এটা আমার একার না‌। এটা সারা বাংলাদেশের মানুষের দাবি।’

তিনি বলেন, ‘দুদক যে রিপোর্ট দেবে, আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম‌‌। রেলের প্রত্যেকটি বিষয়ের হিসাব-নিকাশ নেয়া হবে।’

টাকা কাটার পরও টিকিট না পেয়ে গত ৭ জুলাই থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি।

সোমবার তার অভিযোগ বিষয়ে রেলের টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম সহজ ডটকম ও ভিনসেন জেভি তাদের ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতিও দিয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর